নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২২ এপ্রিল, ২০২৪, সকাল ১১:০০ টায় বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের দাবিতে মূকাভিনয় ও অবস্থান কর্মসূচির অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করি, ধরিত্রী রক্ষা করি এই স্লোগনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের এর চেয়ারম্যান বদরুল আলম, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন নিখিল চন্দ্র ভদ্র, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, এবং ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সভাপতি নিয়াজ মাখদুম সিনা প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের এর চেয়ারম্যান বদরুল আলম ধরিত্রী সম্মেলনের প্রস্তাবনাগুলো বাস্তাবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ধরিত্রী সম্মেলনসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদীদের পরামর্শের ভিত্তিতে প্রণীত প্রস্তাবনাগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না। যার ফলে সাধারণ মানুষ ও এই পৃথিবীর মানুষ এবং প্রাণীকূল আজ বিপন্ন। তিনি আরো বলেন, গবেষকরা আজ ব্যাপভাবে উদ্বিগ্ন যে, শেষ পর্যন্ত আমাদের এই ধরিত্রী টিকে থাকতে পারবে কি না। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যারা দায়ী দেশ তারা তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করছে না। পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে গুরুত্বারোপ করে তিনি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠন এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
কর্মসূচির বিশেষ অতিথি সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে আমাদের পৃথিবী দূষণ করছি যা আমাদের গলার কাটা হয়ে উঠছে। উপকূলের দিকে তাকালে দেখতে পারবো সেখানে নদ-নদী খাল-বিল প্লাস্টিকের কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ হারাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সুন্দরবন দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে প্লাস্টিক দূষণ। তাই আমরা আমাদের আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। বর্তমানে সরকার ও সিটি কর্পোরেন প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা এগুলোর বাস্তবায়ন দেখতে চাই। শুধু সরকার নয় বরং ব্যক্তি, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায় থেকেও প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমরা ধরিত্রীকে এত বেশি উত্তপ্ত করেছি যে আমরা এখন দেখছি প্রকৃতি বিরূপ আচরণ করছে। প্লাস্টিক দূষণের মাধ্যমে আমরা এই পৃথিবীকে চরমভাবে দূষিত করে ফেলছি এবং পরিবেশের ক্ষতি করেছি। যার ফলে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তাই আমরা যদি এই ধরিত্রী রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ করে কাজ না করতে পারি সেক্ষেত্রে আমরা আরো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবো।
কর্মসূচিতে ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সভাপতি নিয়াজ মাখদুম সিনা বলেন, টাকার জন্য আমরা বিভিন্ন কল-কারখানা নির্মাণ করছি এবং গাছ কেটে স্থাপনা নির্মান করছি। আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ শোষন করলে প্রকৃতি বিরূপ আচরণ করা শুরু করবে। বর্তমান সময়ে আমরা এমনটাই দেখতে পারছি।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর কর্মসূচি ও গবেষণা ব্যবস্থাপক ইকবাল ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অবস্থান কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সদস্য মামুন।
সভাপতির বক্তব্যে গবেষণা ও বাস্তবায়ন বিভাগের ব্যবস্থাপক ইকবাল ফরুক বর্তমানে পৃথিবীর এই উষ্ণায়নের পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এসময় তিনি প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে সকলকে আহ্বান জানান।
অবস্থান কর্মসূচির আলোচনা শেষে দেশের গাছ রক্ষা এবং প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন দুটি মূকাভিনয় প্রদর্শন করেন।