প্রিয়ন্ত মন্ডল :ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন-ডিএসসিসি কাকরাইল, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রশস্ত ফুটপাত কেটে ছোট করে ফেলছে। ফুটপাত কোন কোন এলাকায় এত ছোট করেছে যে একজন পথকারীদের চলাচল কঠিন। আবার কিছু এলাকায় ফুটপাত একেবারে বিলীন করে ফেলা হয়েছে। ডিএনসিসি-র এ ধরনের কাজ বেআইনী এবং নাগরিক অধিকার হরণের সামিল। আমরা ডিএসসিসি-র এধরনের কাজের তীব্র নিন্দা জানাই। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নাগরিকদের মানসম্মত পাবলিক পরিবহন দিতে পারছেনা, একই সাথে মানুষের হাঁটার অধিকারও হরণ করে নিচ্ছে। শুধুমাত্র প্রাইভেট গাড়ীর জন্য ঢাকার রাস্তাগুলোকে গড়েতোলা হচ্ছে ।
সড়ক দূর্ঘটনা রোধ সরকারের একটি অগ্রাধিকার কাজ। ঢাকার সড়ক দূর্ঘটনার প্রায় ৭৩% শিকার পথচারী। সরকারের বিভিন্ন নীতিতে পথচারী অগ্রাধিকার নীতি থাকলে ঢাকার কোন রাস্তায় পথচারীদের নূন্যতম নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। জাতীয় সমন্বিত বহুমাধ্যম ভিত্তিক পরিবহন নীতিমালা ২০১৩, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সমন্বিত বহুমাত্রিক পরিকল্পনা, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন-২০০৯, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮, ডিটেলইস এরিয়া প্লান-ড্যাপ, Strategic Transport Plan (STP) ইত্যাদি নীতিগুলোতে পথচারীদের অগ্রাধিকার ও নিরাপত্তা দেয়ার কথা বলা হলেও, ডিএনসিসি এ সকল আইন লঙ্ঘন করে ফুটপাত ছোট করছে। ফুটপাত এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে করে একজন প্রতিবন্ধী হুইল চেয়ার নিয়ে যেতে পারবে না। যার মাধ্যমে ডিএনসিসি-র প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন করেছে।
Dhaka Transport Coordination Authority (DTCA) ও সংশ্লিষ্ট গবেষণায় বলা হয়েছে ২০২৩-এর জরিপ অনুযায়ী, গ্রেটার ঢাকায় দৈনন্দিন যাত্রার মধ্যে প্রায় ৩.৮৭ কোটি ট্রিপ হচ্ছে। তার প্রায় ৩৮.৩% ট্রিপ হচ্ছে হাঁটা অর্থাৎ পায়ে অর্থাৎ প্রায় ১.৪৭ কোটি ট্রিপ হয় পায়ে হাঁটার মাধ্যমে। ২০০৯-এ ওই গবেষণায় পায়ে হাঁটার-এর অংশ ছিল ১৯-২০%। ২০০৯ থেকে ২০২৩-২৫ সালে এ হাঁটার পরিমান প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
আমরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে দ্রুত ফুটপাতকে পথচারীদের বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের চলাচলের উপযোগী করার আহবান জানাই। একই সাথে স্থানীয় সরকার বিভাগ, DTCA এধরনের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহবান জানাই।

