রুপসীবাংলা৭১ অন্যান্য ডেস্ক : হংকংয়ে এক ব্যতিক্রমধর্মী রাজকীয় কার্পেটের প্রদর্শনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। যেখানে চীনা ও ইসলামিক বিশ্বের শতাব্দীজুড়ে চলা সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জীবন্ত প্রমাণগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ব্যতিক্রমধর্মী এই অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করেছে দোহার ইসলামিক আর্ট জাদুঘর (MIA) এবং হংকং প্যালেস মিউজিয়াম (HKPM), যা চলবে ৬ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত।
‘Wonders of Imperial Carpets : Masterpieces from the Museum of Islamic Art’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে ঐতিহাসিক রাজপ্রাসাদে ব্যবহৃত কার্পেটের নকশা, দামি উপকরণ এবং সূক্ষ্ম কারুশিল্পের নিদর্শন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, হংকংয়ে এই প্রথম এমন একটি পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে প্রায় ১০০টি ঐতিহাসিক নিদর্শন—কার্পেট, পাণ্ডুলিপি, সিরামিক, ধাতবসামগ্রী ও জেড (এক ধরনের দামি পাথর), যেগুলোর বেশির ভাগই ১৬ থেকে ১৮ শতকের এবং দোহার MIA-এর সংগ্রহ থেকে আনা হয়েছে। কিছু সামগ্রী এই প্রথম কাতারের বাইরে প্রদর্শিত হচ্ছে।
জাদুঘরের উপপরিচালক মুনিয়া চেখাব আবুদায়া জানান, সাফাভিদ, মোগল ও অটোমান সাম্রাজ্যের শিল্প ঐতিহ্য দীর্ঘদিন ধরে চীনা শিল্পের সঙ্গে বাণিজ্য, কূটনীতি ও চিত্রভাষার মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। সিল্ক রোড এসব বিনিময়ের একটি মূল মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
ইসলামিক কার্পেট সাধারণত রেশম ও সোনার সুতা দিয়ে তৈরি হতো এবং এতে জ্যামিতিক, ফুলেল ও মানুষ-চিত্রকেন্দ্রিক নকশা থাকত। অন্যদিকে চীনা কার্পেটগুলোতে ‘তাও’ ধর্ম বা সাম্রাজ্যের প্রতীক দেখা যেত। চিয়ানলং আমলে জিনজিয়াংয়ে তৈরি ‘ফুলের কার্পেট’ তার একটি উদাহরণ।
দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে ১৬ মিটার দীর্ঘ কেভোরকিয়ান হায়দরাবাদ কার্পেট, যা মোগল দরবারে ব্যবহৃত হতো।
প্রদর্শনীতে আরো দেখা যাবে অটোমান যুগের ‘সিনতামানি’ নামাজের কার্পেট। কার্পেটের কেন্দ্রে রয়েছে নামাজের স্থান এবং নিচে আছে নবীজি (সা.)-এর খড়মের বিমূর্ত চিত্র।
প্রদর্শনীর প্রতিটি বস্তু শুধু শিল্পসৌন্দর্যের নিদর্শন নয়, বরং ইসলামী ও চীনা সভ্যতার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা পারস্পরিক প্রভাব ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি দৃশ্যমান দলিল।
রুপসীবাংলা৭১/এআর