নিজস্ব প্রতিনিধঃ কোডিও ১৯ (ERPP) জরুরি জনবলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অবস্থান ও আমরণ অনশণ কর্মসূচি পালন করছে টানা তৃতীয় দিনের মত। ২৯ এপ্রিল ২০২৫ সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরণ অনশন চলাকালীন সময়ে অনশনরতরা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন কোডিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স এন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ERPP) প্রকল্পে নিয়োজিত ১০০৪ জন জরুরি জনবল যাদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক, ল্যাব কনসালটেন্ট, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, ল্যাব এটেডেন্ট, আয়া, ওয়ার্ড বয় ও ক্লিনার। কোভিড ১৯ মহামারির শুরুতে সারা দেশের মানুষের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ শুরু করি। সে সময় বহু মানুষ সংক্রমণের ভয়ে এগিয়ে না এলেও আমরা মানবিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করি।
কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর চুক্তি নবায়ন করে কাজ চালিয়ে নেয় এবং মৌখিকভাবে ভবিষ্যতের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করে যাতে কেহ অনত্র চাকুরীর চেষ্টাটুকুও করেনি। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের অর্থায়ন শেষ হলেও ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৫ম এইচভিএনএসপির আওতায় প্রকল্প চলমান রাখার বিষয়ে প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির (PSC) নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। মৌখিক নির্দেশনায় আমরা নিরবিচারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আজ প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন, চুক্তিরা বেতন পাচ্ছি না, ফলে আমাদের পরিবার-পরিজনসহ মানবেতর জীবনযাপন
করোনাকালীন সময়ে আমরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকেড এ থেকে ৪ বার আভায় হয়েছি। প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হওয়া ছাড়াও, এখন আমরা অনেকেই পোস্ট-কোভিড জটিলতায় ভুগছি, যা আমাদের দীর্ঘ জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই বিষয়ে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা দায়িত্বশীল আচরণ দেখা যায়নি। এছাড়াও, লক ডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ার পর সরকারি দপ্তর নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করলে, আমাদের অনেকের বয়স সরকারি চাকরির জন্য সীমার শেষ। দেশের সংকটকালে জাতির পাশে দাঁড়ানোর কারণে অনেকেই সরকারি চাকরির বয়সসীমা পার করে ফেলেছেন। অথচ, এই ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন অধিদপ্তর করেনি বরং এটি প্রহসনমূলক আচরণ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমাদের প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩০টি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সেবায় আমাদের জনবল গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে, যেখানে অনেক গরীব অসহায় রোগীরা জেলা পর্যায়ে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা বিনামূল্যে পাচ্ছেন।
এই মুহূর্তে আমাদের জনবল ব্যতীত স্বাস্থ্য খাতে এক চরম বিপর্যয় দেখা দিতে, পারে এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও মৌলিক অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।এই প্রেক্ষাপটে, আমরা গত ২৭ এপ্রিল ২০২৫ সকাল ৯টায় সাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করেছিলাম কিন্তু কর্তৃপক্ষ তেমন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজ সকাল ৯ ঘটিকা হতে আমরা পারিপূর্ণ আমরন অনশ কর্মসূচী পালন করছি।
আমাদের দাবি-১০০৪ জন কর্মরত জনবলের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধ ও চাকুরী স্থায়ীকরণ।
অনতি বিলম্বে এ দাবী মেনে নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সুদৃষ্টি প্রার্থনা করেন। যতক্ষন দাবী মানা না হবে ততক্ষন আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সদস্য অসুস্থ্য হলেও কতৃপক্ষ কোন ভূমিকা নেয়নি বলেও তারা অভিযোগ করেন।