নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ধুমধাম করে দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচণের কাজ আগেও দেখেছি। ক্যাসিনো নিয়ে যাদের ধরা হয়েছিলো তারা এখন বহাল তবিয়তে আছে। শেষ পর্যন্ত কী হবে তা আমরা জানিনা। সাধারণ মানুষের ধারণা, সরকারে থেকেই রাজনীতিবিদরা দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করে দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে। সরকার এতো ক্ষমতাবান হয়ে গেছে, তারা জবাবদিহিতার স্তম্ভগুলো পাশ কাটিয়ে যেতে পারছে। জবাবদিহিতা না থাকার কারণেই দেশে অর্থনৈতিক মন্দা, আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি, নিরাপত্তার অভাব এবং ভালো দেশের আশা থেকে মানুষ নিরাশ হচ্ছে। তিনি বলেন, দুদকের কর্মকান্ড নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে। আমরা দেখেছি দুদক সবসময় বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের দিকে বেশি দৃষ্টি দেয়। অনেক বড় রুই-কাতলা সরকারের সাথে থাকছেন, সরকারের আনুকূল্য পাচ্ছেন, তাদের দিকে দুদকের দৃষ্টি কম। সাধারণ মানুষের ধারণা, দুদক ক্ষমতাসীনদের ধরে ধরে ক্লীন সার্টিফিকেট দেয়।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে দেয়া সাক্ষাতকারে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, রাজনীতিবিদরা দেশের সকল কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। রাজনীতিবিদদের হাতেই দেশের ষ্টিয়ারিং হুইল থাকে। রাজনীতিবিদরা যেদিকে দেশকে নিয়ে যাবেন, দেশ সে দিকেই যাবে। রাজনীতিবিদরা চাইলেই আমলারা দুর্নীতিবাজ হতে পারে। রাজনীতিবিদরা চাইলেই ব্যবসায়ীরা রাজনীবিদ হয়ে দুর্নীতিবাজ হতে পারে। এটা প্রতিদিন বেড়েই চলছে। উদ্ধার পেতে হলে রাজনীতিবিদদের দিকেই দৃষ্টি দিতে হবে। কাউকেই আইনের উর্ধে অবস্থান দেয়া ঠিক না। আইনের শাসন অর্থ কেউই আইনের উর্ধে নয়। সরকারের দায়িত্ব ছিলো এটা নিশ্চিত করা, যত ক্ষমতাধরই হোক সবাইকে আইনের আওতায় থাকতে হবে। দুর্নীতি হঠাৎ করে দেখা গেছে, হঠাৎ করে শুরু হয়নি। রাজনীতিবিদরাই দীর্ঘদিন ধরে দেশের দুর্ণীতি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। রাজনীতিবিদরাই দুর্নীতিকে সহায়তা করেছে। আমলাদের দুর্নীতি থেকে রাজনীতিবিদরাই মুনাফা নিয়েছে। দুর্নীতি রোধ করতে হলে রাজনীতিবিদদের টার্গেট করতে হবে। কাউকেই আইনের উর্ধে রাখা যাবে না। আইনের শাসন নিশ্চিত হলেই জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত হবে। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্রের জন্যই দেশের মানুষ জীবন দিয়েছিলো। আমরা চাই সরকার দুর্নীতি রোধ করতে কাজ করবে, এটাই স্বাধীনতার চেতনা।