নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সাইবার নিরাপত্তা, স্টার্টআপ এক্সচেঞ্জ, মহাকাশ প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জ্ঞান স্থানান্তরের ক্ষেত্রেও ফ্রান্স বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করবে। বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক এর সাথে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎপরবর্তী ব্রিফিংয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ফ্রান্স স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে তার দক্ষতার জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের পর ২০১৮ সালের ১২ মে, প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ফ্রান্স। বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) এয়ারবাসের সাথে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’, অপটিক্যাল স্যাটেলাইট, এসএআর স্যাটেলাইট এবং বাংলাদেশে মহাকাশ প্রযুক্তির আরও উন্নয়নের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্স বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু।
প্রতিমন্ত্রী সম্প্রতি ফ্রান্সের এয়ারবাস, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্কুল ফরটি টু, ফ্রান্সের ট্রেড মিনিস্টার এবং দেশটির বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সাথে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষীক বৈঠকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ভবিষ্যৎমুখী তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়তে ফ্রান্সের সঙ্গে গভীরভাবে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। এ জন্য বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল ফ্রান্স সফর করেছে। ফ্রান্সের সঙ্গে আমরা নতুন একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ- এ তিনটি বিষয় হচ্ছে আমাদের ফ্রান্স ভিজিটের মূল উদ্দেশ্য। ফ্রান্সের ট্রেড মিনিস্টারের সাথেও ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। একই সময়ে ফ্রান্স বা ইউরোপের অন্যতম একটি বড় প্রযুক্তি উৎসব ডিভাটেকে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।
সফরকালে ফ্রান্সের এয়ার বাসের স্যাটেলাইট তৈরির ল্যাব পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুরে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য ফ্রান্সের অত্যন্ত সফল একটি উদ্যোগ রয়েছে। সেটি হচ্ছে স্কুল ফরটি-টু। সেটার সঙ্গে আমাদের একটি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আমরা তাদেরকে বাংলাদেশে আনতে চাই।’ জনাব পলক আরও বলেন, ‘স্যাটেলাইট কোম্পানি এয়ার বাসের পক্ষ থেকে আমাদের দক্ষতা, যোগ্যতা ও সক্ষমতা তৈরি করার জন্য কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা সেটাও বিবেচনায় নিচ্ছি। বাংলাদেশে আমরা যাতে যৌথভাবে স্যাটেলাইট অ্যাসেম্বল করতে পারি, স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পারি, এটিও একটি উদ্দেশ্য।’
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার, ইউনিভার্সিটি বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, ডাটা এনালিটিক্স, রোবটিক্স, মাইক্রোচিপ ডিজাইনিং, সাইবার সিকিউরিটি- এ ধরনের ভবিষ্যতমুখী প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য তাদের (ফ্রান্স) সঙ্গে আনুষ্ঠানিক একটা চুক্তিতে যাওয়ার জন্য আমরা ভিজিট করছি। পাশাপাশি অ্যানিমেশন ফ্রান্সের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা চমৎকার একটি অ্যানিমেটেড ফিল্ম এবং ল্যাব তৈরি করব।
সাক্ষাতকালে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের যুগ্মসচিব ড. রাশিদা ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন।