নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ৮ জুন সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরাম এর উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসাইন। বক্তব্য রাখেন এডভোকেট শেখ টিপু সুলতান, জায়েদ ইকবাল খান, খান মোহাম্মদ রুস্তম আলী, মেহেদী হাসান, নূরে আলম খান, বদরুল আলম, শিউলি সিকদার, মুর্শিদা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বাংলাদেশের উপক’ল রক্ষায় টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ ও সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার কোন বিকল্প নাই। কিন্তু গত ৬ জুন ২০২৪ ঘোষিত বাজেটে এ ব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ ও দিক নির্দেশনা নাই। এতে করে উপকূলীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীরা মনে করেছিল অতিসম্প্রতি সংঘঠিত হয়ে যাওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে যে জানমালের অপরিসীম ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা পুশিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ঘোষিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে, কিন্তু রাখা হয়নি। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল হচ্ছে সবুজ ও নীল অর্থনীতির সমৃদ্ধ অঞ্চল। এ অঞ্চলকে সুরক্ষা করতে পারলে দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। এ জন্য সরকারের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরী। কিন্তু বিগত ৫৪ বছর বাংলাদেশে কোন সরকারই এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেনি। ১৯৭০ সালে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে এই অঞ্চলের ৩ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিবিধ্বস্ত অঞ্চল সফর করে অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেছিল, বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলের মানুষকে সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর কন্যার শেখ হাসিনা একটানা চতুর্থবারের মত ক্ষমতায় থাকার পরেও উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের এই দুঃখ দুর্দশা দূর হয়নি। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসে এখনও মানুষ প্রাণ হারায়। অথচ আমরা জানি ইউরোপের একটি দেশ নেদারল্যান্ড সমুদ্র পৃষ্ঠের নীচে অবস্থান করলেও তারা সমুদ্র কূলবর্তী এলাকায় বেড়িবাধ নির্মাণ করে দেশ ও দেশের মানুষকে সুরক্ষা দিয়েছে। বাংলাদেশ নেদারল্যান্ড থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করতে পারে এবং দেশের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটাতে পারে। এর জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। যদিও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চলাচলের অনেক অসুবিধা লাঘব করেছে। এ জন্য বরিশাল বিভাগের মানুষের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন। বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরাম মনে করে পদ্মাসেতু জাজিরা পয়েন্ট থেকে পায়রাবন্দর সংযোগ সেতু ও সড়ক নির্মাণ করা হলে অত্র এলাকার মানুষের শতবছরের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হতে পারে এবং তার প্রভাব জাতীয় অর্থনীতিতে পড়বে।
নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের বাড়ী-ঘর নির্মাণ ও ত্রাণ সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন জরুরী। এই পুনর্বাসন কাজ বিলম্বিত হলে ওই অঞ্চলের মানুষদেরকে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সাহায্যের উপর নির্ভর করতে হবে, যা সরকারের জন্য একটি বাড়তি বোঝা হিসেবে দাড়াবে। তাই অনতিবিলম্বে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত মানুষের বাড়ী-ঘর নির্মাণসহ জরুরী সাহায্য দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকার সুরক্ষা করবেন।