ইকবাল হোসেনঃ মঙ্গলবার ২১ মে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদ এর ১৪তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনকে সামনে রেখে দেশের ৩০০ টি আসন থেকে আগত যুব প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদের ১৪তম অধিবেশনে তাদের মতামত, কর্মপরিকল্পনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
অধিবেশনের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন- নীতি নৈতিকতার দিক থেকে তরুণদের সচেষ্ট থাকতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রত্যেকটি গ্রাম হবে একেকটি শহর। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় পল্লীর যুবদের উন্নয়নে সব সময় কাজ করছে।
অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেরদৌস আহমেদ, এমপি। তিনি বলেন, তারুণের শক্তি আজকে এই অধিবেশনের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। তরুণদের বিশ্ববিদ্যালয় ও বাসার ছাদে পুষ্টি বাগান করা আহহ্বান জানান। বিশেষ অতিথি মাননীয় সংসদ সদস্য অনিমা মুক্তি গমেজ এমপি বলেন, তরুণদের এই প্রাণবন্ত আলোচনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমরা আজকে এই তরুণদের কাছ থেকে শক্তি নিয়ে গেলাম। আমরা যা বলব তা আজ তরুণদের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে এসেছে।
মোঃ শহিদুল আলম, এনডিসি, মহাপরিচালক, এফপিএমইউ খাদ্য মন্ত্রণালয়, বলেন, যুবদের প্রতি নীতি নিরধারনি মহলের এই গুরুত্ব তরুণদের উৎসাহিত করবে। অতীতের তরুণদের মত বর্তমানের তরুণরাও অনেক বেশি এগিয়ে ও দূরদর্শী। খাদ্য অপচয় করার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বছরে তখন ২০ লক্ষ টন খাদ্য আমদানি করতে হবে না। এতে প্রয়োজন তরুণদের ব্যপক অংশগ্রহণ। নিরাপদ খাদ্যের জন্য তরুণদের অবদান রাখা অনেক বেশি জরুরী। গ্রামের কৃষকদের থেকে ন্যায্য দামে কিনে বিক্রির মাধ্যমে তরুণদের খাদ্য বিপননে অংশগ্রহণ করতে হবে।
গেইন বাংলাদেশের পোর্টফোলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল বলেন, সংসদীয় চর্চা এই তরুণদের ভবিষ্যতে নেতৃত্ব উন্নয়নে কাজ করবে। খুব ছায়া সংসদ তরুণদের মেধাভিত্তিক নেতৃত্বদানে সহায়তা করে। এটিএম তাহমিদুজ্জামান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইউসিবি পিএলসি বলেন, তরুণরাই দেশের সম্ভাবনা। কৃষি, প্রযুক্তিতে তরুণরা এগিয়ে। তরুণদের মাঝে জাতির পিতা নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন নিয়ে ঐকমত্য থাকতে হবে।
ছায়া অধিবেশনের সভাপতি, শিশির কুমার শীল, সাধারণ সম্পাদক, অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি), বলেন, তরুণদের এ ধরনের ছায়া অধিবেশনে। নিয়মিত যুক্ত হওয়া উচিত। তরুণদের সামনে রয়েছে উন্নয়নের অংশীদার হবার অবারিত সুযোগ।
১৪তম অধিবেশনে উত্থাপিত প্রস্তাবনা সমুহঃ
১। খাদ্য ব্যবস্থাপনায় যুববান্ধব বাজেট প্রণয়ন করা
২। টেকসই খাদ্য উৎপাদনে তরুণদের জন্য বিভিন্ন কৃষি বান্ধব কর্মশালা ও গবেষণা প্রণোদনা প্রদান করতে হবে।
৩। নিরাপদ ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদনে তরুণরা যাতে অংশ নিতে পারে তার জন্য খুব বান্ধব বাজেট প্রয়োজন।
৪। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে তরুণদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
৫। পরিবেশ দূষণ রোধে খাদ্য ব্যবস্থাপনায় যুব অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট বাজেট প্রণয়ন প্রয়োজন।
৬। যুব উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনায় যুবদের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৭। খাদ্য ব্যবস্থাপনায় ভিন্ন মাত্রা যোগ দিতে নীতিনির্ধারণী মহলকে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
৮। তরুণদের নিয়ে বাজার ব্যবস্থাপনায় বিশেষ মনিটরিং সেল ও অ্যাপ তৈরি
৯। কৃষিতে খুব বান্ধব বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
১০। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের কৃষিতে আকর্ষিত করতে কৃষি ঋণ প্রদান করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিশির কুমার শীল, সাধারণ সম্পাদক, অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপস (এপিপিজি)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ, এমপি, মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেরদৌস আহমেদ, সংসদ সদস্য, ঢাকা-১০, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, অনিমা মুক্তি গমেজ, সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, মোঃ শহীদুল আলম এনডিসি, মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট (এফপিএমইউ), খাদ্য মন্ত্রণালয়, জাকির হোসেন আকন্দ, প্রাক্তন সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ইম্প্রোভড নিউট্রিশন (গেইন) এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডঃ রুদাবা খন্দকার ও পোর্টফলিও লিড মনিরুজ্জামান বিপুল, এটিএম তাহমিদুজ্জামান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা। পরিচালক, ইউসিবি, পিএলসি। এছাড়াও সুশীল সমাজ ও মিডিয়া ব্যক্তিসহ আরো গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্ণ উচ্চ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।