ইকবাল হোসেনঃ ধর্ম মন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন,একজন সফল নেতা বা নেতৃত্বের দেশপ্রেম ,ভিশন-মিশন-কমিটমেন্ট, সততা-স্বচ্ছতা- জবাবদিহিতা দূরদর্শিতা থাকতে হবে, মানবিকতা, সৎ সাহস, সৃজনশীলতা সমানুভূতি বা এমপ্যাথি, আবেগ, আত্মসচেতনতা ব্যক্তিত্ব থাকতে হবে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে মৌলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমির উদ্যোগে”দেশ ও জাতির উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের বিকল্প নেই” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন ।
তিনি বলেন,একজন সফল নেতৃত্বের গুণাবলী বা বৈশিষ্ট্যের মানদণ্ডে যদি আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচার করতে যায় তাহলে দেখবেন একজন সফল নেতৃত্বের সকল বৈশিষ্ট্যই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মাঝে রয়েছে।স্বাধীনতা মহাকাব্যের অমর কবি, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি,মুক্তির মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গ রাজনীতি ও আদর্শের উত্তরাধিকার জননেত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলেন,শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যদি আমরা দেখার চেষ্টা করি তাহলে আমরা দেখতে পাই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সরকারি ইন্টার মিডিয়েট গার্লস কলেজের ছাত্রী সংসদের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি এই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরের বছর সভাপতি ছিলেন। শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন সদস্য এবং ছাত্রলীগের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রজীবন থেকেই শেখ হাসিনা সকল গণআন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এটা হলো ৭৫ পূর্ববর্তী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা।১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট পিতামাতা, ভাই-ভাবী ও নিকটতম আত্মীয়দেরকে হারিয়েছেন। এরপর প্রায় ৬ বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রবাসে অনেকটা নির্বাসনের মতো থেকেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসকেরা দীর্ঘ সময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। ১৯৮০ সালে ইংল্যান্ডে থেকে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে অবশেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।
তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর হতে ৬ বছরের প্রবাস জীবন যেখানে প্রাণনাশের ঝুঁকিও ছিলো এবং পরবর্তীতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন- এই প্রেক্ষিতটা যদি আমরা একটু উপলব্ধি করার চেষ্টা করি তাহলে তার মধ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য খুঁজে সেটা হলো অ্যাডাপট্যাবিলিটি বা সহনশীলতা-ধৈর্য। এছাড়া আরেকটি বিষয়ও উল্লেখ করা যায়- সেটা হলো আত্মনিয়ন্ত্রন বা self-Controlled একইসাথে ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা ও সাহস এটিও তাঁর মধ্যে আমরা দেখতে পায়।
১৯৮১ সালে দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার পরপরই তিনি শাসকগোষ্ঠির রোষানলে পড়েন। তাঁকে বারবার কারান্তরীণ করা হয়। তাঁকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র হামলা করা হয়। ১৯৮৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার তাঁকে আটক করে ১৫ দিন অন্তরীণ রাখে। ১৯৮৪ সালের ফেব্রুয়ারি এবং নভেম্বর মাসে তাঁকে দু’বার গৃহবন্দি করা হয়। ১৯৮৫ সালের ২মার্চ তাঁকে আটক করে প্রায় ৩ মাস গৃহবন্দি করে রাখা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে তিনি ১৫ দিন গৃহবন্দি ছিলেন। ১৯৮৭ সালে ১১ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করে এক মাস অন্তরীণ রাখা হয়। ১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা গ্রেফতার হয়ে গৃহবন্দি হন। ১৯৯০ সালে ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু ভবনে অন্তরীণ।
তিনি আরো বলেন,২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে সংসদ ভবন চত্বরে সাবজেলে পাঠায়। প্রায় ১ বছর পর ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি মুক্তিলাভ করেন। এতো নির্যাতনের পরও তিনি ভেঙে পড়েননি, মনোবল হারাননি।
তিনি বলেন,শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে উল্লেখযোগ্য হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে তাঁকে লক্ষ করে পুলিশের গুলিবর্ষণ। এতে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, বাবুল ও ফাত্তাহ নিহত হন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁকেসহ তাঁর গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে শেখ হাসিনাকে লক্ষ করে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী শহিদ হন। লালদীঘি ময়দানে ভাষণদানকালে তাঁকে লক্ষ্য করে ২বার গুলি বর্ষণ করা হয়। জনসভা শেষে ফেরার পথে আবারও তাঁর গাড়ি লক্ষ করে গুলি বর্ষণ করা হয়। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বারবার হামলা করা হয়। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপ- নির্বাচন চলাকালে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনকালে তাঁকে লক্ষ করে পুলিশের গুলিবর্ষণ। এতে যুবলীগ নেতা নূর হোসেন, বাবুল ও ফাত্তাহ নিহত হন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাঁকেসহ তাঁর গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে শেখ হাসিনাকে লক্ষ করে এরশাদ সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী শহিদ হন। লালদীঘি ময়দানে ভাষণদানকালে তাঁকে লক্ষ্য করে ২বার গুলি বর্ষণ করা হয়। জনসভা শেষে ফেরার পথে আবারও তাঁর গাড়ি লক্ষ করে গুলি বর্ষণ করা হয়। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য বারবার হামলা করা হয়। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপ- নির্বাচন চলাকালে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
তিনি আরো বলেন,শত বাধা-বিপত্তি এবং হত্যার হুমকিসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা ভাত-ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত হতে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।
তিনি কি বলেন,চতুর্থ মেয়াদে উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়ন দেশের কাতারে অন্তভুক্তিকরণ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত এবং ঢাকায় মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বেশ কয়েকটি জেলা শহরের সংযোগ সড়ক চার- লেনে উন্নীত করা হয়েছে। রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ,মিতালী পরুলসহ বিভিন্ন মেগা আজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মিত হচ্ছে। সবগুলি বিভাগে আইসিটি পার্ক নির্মাণের কাজ চলছে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ২৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি এমরান হোসেন ,প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধর্ম মন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি, এছাড়া বক্তব্য রাখেন এম এ করিম,চিত্তরঞ্জন দাশ, মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, লায়ন মোঃ গনি মিয়া সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।