নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান পুরাকীর্তি সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দিরের দেবোত্তর ভূমিতে অবৈধভাবে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগেকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি এ ধরণের অনাকাংক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি রক্ষার জন্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার অনুরোধ করছে।
গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়, ১ মার্চ দিনাজপুর-১ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য জাকারিয়া জাকা, কান্তজিউ মন্দিরের জমিতে মসজিদ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৩ মার্চ দিনাজপুর রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রণজিৎ কুমার সিংহ নির্মাণ কাজ বন্ধ চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন নির্মাণকাজ সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। মন্দিরের জমিতে মসজিদ নির্মাণ করায় ক্ষুব্ধ সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, পুরকীর্তি সমৃদ্ধ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান ঐতিহাসিক এই কান্তজিউ মন্দির। মন্দিরের বিশাল জমি দীর্ঘদিন ধরে বেহাত পড়ে আছে। এই সুযোগে একটি চক্র আগে থেকেই টিনের চালা দিয়ে মসজিদ নির্মাণ করে। এখন সেখানে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে একটি গোষ্ঠী এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তাদের।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে নির্মাণকাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, মসজিদের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। মন্দিরের পাশে মালিকানায় বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থায়ী অবকাঠামো দিয়ে পাকা করে মসজিদ নির্মাণের চেষ্টার ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বিনষ্টসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন আশংকা করছেন।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) মনে করে, পুরাকীর্তি সমৃদ্ধ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান দিনাজপুরের ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দিরের দেবোত্তর ভূমিতে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগের বিষয়টি অসাংবিধানিক, বেআইনি, অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারমূলক। এ ঘটনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমএসএফ মনে করে, কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে তা ধর্মান্ধতা ও সম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকে দেবে। পাশাপাশি, এর ফলে জানমালের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হবে। এমএসএফ সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি রক্ষার জন্য প্রশাসন ও সরকারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।