নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ১১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় মুসলিম লীগ গণতন্ত্রের স্বার্থে তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অপরিহার্য। জনগণের উপর আস্থা হারিয়ে, ফ্যাসিবাদকে আঁকড়ে ধরে শেখ হাসিনা নিজেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য করে তুলেছিল। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী রাজনৈতিক শূন্যতা ও দেশী-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে গণঅভ্যুত্থানকে গণতন্ত্রে পরিণত করার জন্য নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অপরিহার্য। নাহয় ফ্যাসিবাদের চাইতেও ভয়ঙ্কর কোন অপশক্তি দেশকে গ্রাস করতে পারে। একদিকে ১/১১তে সৃষ্ট গণতন্ত্রের ক্ষত অপরদিকে ফ্যাসিবাদীদের লণ্ডভণ্ড করে রেখে যাওয়া বিধ্বস্ত অর্থনীতি ও বিশৃঙ্খল প্রশাসন। এর সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অবিশ্বাস ও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব জাতীয় ঐক্যে বিরাট ফাটল সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় আবারও অগণতান্ত্রিক অশুভ কোন শক্তির উত্থান দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে স্থায়ী ভাবে বিপন্ন করে তুলতে পারে। আজ ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বেলা তিনটায় ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের ১১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে দলীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সৈয়দ আব্দুল হান্নান নূরের সভাপতিত্বে দলীয় প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নিঃসন্দেহে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশ রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মুসলিম জাতিসত্তার আদর্শে বলিয়ান এই রাজনৈতিক দলটি বেনিয়া ইংরেজ ও ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের শোষণ, বঞ্চনা আর অবহেলায় দিশেহারা মুসলমানদের শুধু ঐক্যবদ্ধই করেনি, ৪১বছর লাগাতার লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে ভারত বিভক্ত করে প্রতিষ্ঠা করেছিল মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের। আজাদি আন্দোলন নামে পরিচিত আমাদের এ বুনিয়াদী স্বাধীনতার উপর ভর করেই ১৯৭১সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা। বঙ্গভঙ্গের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ভারতবর্ষের মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার প্রধান লক্ষ্যে, ঢাকার নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহর প্রচেষ্টায় ও প্রস্তাবনায় নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের আগ্রাসন মোকাবেলায় ৪৭এ প্রমাণিত মুসলিম জাতিসত্তা তথা মুসলিম লীগ রাজনৈতিক আদর্শের আজও কোন বিকল্প নেই। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মুসলিম লীগের অনড়, আপোষহীন ও ধারাবাহিক অবস্থান আজ গোটা জাতীর কাছেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষা-কবচ হিসাবে মূল্যায়িত হচ্ছে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, দলীয় মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, স্থায়ী কমিটির সদস্য আকবর হোসেন পাঠান, অতি. মহাসচিব কাজী এ.এ কাফী ও মাকসুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদ, মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, প্রচার সম্পাদক মামুনুর রশীদ, কেন্দ্রীয় নেতা রুবেল বিন গাফ্ফার, শফিকুল ইসলাম জাবেদ, খান রায়হান. শাহজাহান কবির প্রমুখ। দলের ১১৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১১.০০টায় বেগমবাজার নবাব বাড়ী কবরস্থানে দলীয় নেতৃবৃন্দ মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠাতা নবাব সলিমুল্লাহর কবর জিয়ারত করেন। এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও তার রুহের মাগফেরাত কমনা করা হয়।

