নিজস্ব প্রতিনিধি :রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার জনগনের মাঠ, পার্ক ও উন্মুক্ত স্থানগুলো বিভিন্ন ক্লাবের নামে দখল করে নিচ্ছে। আর এ দখলের ক্ষেত্রে কখনো কখনো রাজনৈতিক দলের কর্মীর পরিচয়কে ব্যবহার করা হয়। ফলে শিশু কিশোরদের খেলার অধিকার সংকুচিত হচ্ছে। মাঠ দখলকারী এ সকল ক্লাবের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল এবং রাজনৈতিক দল ব্যবহারকারী ব্যক্তিদের দল হতে বহিষ্কার করার পাশাপাশি বিদ্যমান আইন সংশোধন করা হলে এ দখলদারিত্বের অবসান করা সম্ভব। আজ ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ বারসিক, সেন্টার ফর ল’ অ্যান্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন—পবা এর যৌথ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ‘‘মাঠ ও পার্ক রক্ষায় রাজনৈতিক দলের কাছে প্রত্যাশা’’বিষয়ক আলোচনা সভায় এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে অনেক স্থানে শিশু, কিশোর ও সাধারণ মানুষের জন্য সংরক্ষিত খেলার মাঠ ও পার্কগুলি রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী সদস্য বা সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতার পরিচয়ে দখল বা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, যেখানে তারা ক্লাবঘর, স্থায়ী কাঠামো বা মেলার মতো কার্যক্রম বসিয়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশ ও খেলাধুলার সুযোগ সীমিত করছে; প্রকৃত খেলাধুলা ও উন্মুক্ত স্থান ব্যবহারের অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মাঠ পার্কগুলোর রক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনী ইস্তেহারে মাঠ, পার্ক রক্ষায় বিষয়গুলো যুক্ত করতে হবে।
বক্তারা বলেন, মাঠ রক্ষায় পরিবেশবাদী, সাধারণ নাগরিক একাধিকবার আদালতের দারস্ত হয়েছে। মহামান্য আদালত মাঠ পার্ক রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু সরকারের নির্বাহী বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার আদালতের নির্দেশনা কোনভাবেই আমালে নেয়নি। বরং আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে মাঠ পার্ক ইজারা দিয়েছে এবং রক্ষায় কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। দেশের নগর, মহানগরীর মাঠ, পার্কগুলো রক্ষায় মাঠ, পার্ক জলাধার রক্ষা আইন ২০০০ রয়েছে। বিদ্যমান মাঠ, পার্ক জলাধার আইন এ সকল মাঠ, পার্ক রক্ষায় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখছে না। এ আইনের দুর্বলতার সুযোগে দখলদার ক্লাবগুলো মাঠ দখল করে নিচ্ছে। বিদ্যমান আইন সংশোধনের অঙ্গীকার দলের ইস্তিহারে যুক্ত করার আহবান জানাই।
বক্তারা সভায় কমিউনিটি মাঠ কোনোভাবেই স্টেডিয়াম, বাণিজ্যিক বা ইনডোর স্থাপনায় রূপান্তর না করা; মাঠ ও পার্কের জন্য পৃথক বাজেট নিশ্চিত করতে হবে এবং কোনো ক্লাব বা প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা না দেওয়া। সকল মাঠ ও পার্ক থেকে অবৈধ স্থাপনা, টার্ফ ও ক্লাব দখল উচ্ছেদ করে নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, ওয়াসার পাম্পের ভাড়া মাঠ রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয়, পাশাপাশি কমিউনিটি ভবনে লাইব্রেরি ও বসার জায়গা গড়ে তুলতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে মাঠ, পার্ক ও জলাধার সংরক্ষণে আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন/সংশোধন, সারাদেশের মাঠ–পার্কের তালিকা প্রকাশ, পর্যাপ্ত অর্থায়ন এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার সুপারিশ করেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন, মো জাহাঙ্গির আলম ,নগর গবেষক ও সমন্বয়ক ,বারসিক, এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সেক্রেটারী, সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স, এডভোকেট আওলাদ হোসেন, চেয়ারম্যান, গ্লোবাল লিগ্যাল স্ট্যাডিজ এন্ড ডেভলাপমেন্ট সেন্টার, অধ্যাপক কামরুজ্জামান, চেয়ারম্যান, ক্যাপস, মেজবাহ উদ্দিন সুমন,সাধারণ সম্পাদক,পবা, সৈয়দা অনন্যা রহমান, হেড অব প্রোগ্রাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, শাহ ইসরাত আজমেরী, চেয়ারম্যান, চিল্ডেন ওয়াচ ফাউন্ডেশন, মেহেনাজ মালা, নির্বাহী পরিচালক, কসমস, নগর পরিকল্পনাবিদ কায়কোবাদ হোসনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ।

