রুপসীবাংলা৭১ তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণাকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের নতুন এক আবিষ্কার। এতদিন মনে করা হতো, আদিমানবেরা আজ থেকে প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে আগুন জ্বালানোর জ্ঞান অর্জন করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অনুসন্ধান বলছে, আধুনিক মানুষের আবির্ভাবের বহু আগে অন্তত চার লক্ষ বছর আগে থেকেই আগুন জ্বালাতে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছিল তারা।
লন্ডন থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার উত্তরে বার্নহাম গ্রামে খননকার্য চালানোর সময় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা উনুনের মতো পোড়া মাটি, তাপে ভেঙে যাওয়া পাথরের কুঠার এবং পাইরাইট (আয়রন সালফাইড)-এর দু’টি টুকরো খুঁজে পান। এই পাইরাইট হলো সেই ধরনের পাথর যা থেকে স্ফুলিঙ্গ তৈরি করে দাহ্য বস্তুতে আগুন ধরানো সম্ভব। এই নিদর্শনগুলিই প্রমাণ করে, ওই এলাকার আদিবাসীরা আগুন জ্বালাতে এবং প্রয়োজন মতো নিয়ন্ত্রণ করতে জানত।
এর আগে মানুষের আগুন জ্বালানোর সবচেয়ে প্রাচীন অকাট্য প্রমাণ মিলেছিল ফ্রান্সে, যা ছিল আনুমানিক ৫০ হাজার বছর আগের। কিন্তু ব্রিটেনের এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি প্রায় ৪ লক্ষ বছরের পুরনো ইতিহাস বহন করছে। অর্থাৎ, এতদিন যা মনে করা হতো তার চেয়ে অন্তত সাড়ে তিন লক্ষ বছর আগে থেকেই আগুন জ্বালানোর কৌশল রপ্ত করেছিল আদিমানবেরা।
এই সময়ে পৃথিবীতে আধুনিক মানুষ অর্থাৎ হোমো সেপিয়েন্সের আবির্ভাবই হয়নি। এই আবিষ্কার থেকে গবেষকদের অনুমান, সম্ভবত নিয়ানডারথালরা সেই সময় থেকেই আগুন জ্বালানো শিখে গিয়েছিল। লন্ডনের ব্রিটিশ জাদুঘরের প্রস্তর যুগের সামগ্রী সংরক্ষক নিক অ্যাশটন এই প্রত্নতাত্ত্বিক দলের নেতৃত্ব দেন। নেচার জার্নালে প্রকাশিত তাদের গবেষণাপত্রে অ্যাশটন বলেন, এটি বিশ্বের যে কোনও স্থানের তুলনায় আগুন জ্বালানোর প্রাচীনতম প্রমাণ। এই আবিষ্কার মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করল।
রুপসীবাংলা৭১/এআর

