নিজস্ব প্রতিনধিঃ অদ্য ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ শুক্রবার ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিক্সা মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পরিক্ষা বে-সরকারী খাতে প্রদান বন্ধ রেখে বিআরটিএ প্রয়োজন অনুযায়ী লোকবল নিয়োগ করে সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে যুগোপযোগী কার্যসম্পাদনের দাবিতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর মোর্শেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক এ এ এম ফয়েজ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফিটনেস ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বেসরকারি প্রতিরোধ মালিক পরিবহন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক মোঃ সিরাজুল ইসলাম শিপন। বক্তব্য রাখেন অত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আব্দুল জাব্বার, যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন। আরো বক্তব্য রাখেন, আবু নাছির বেপারী, বদরুল আলম, জাকির হোসেন, মনির হোসেন, রেজাউল করিম, শাহাদাত হোসেন রনি, সিরাজুল ইসলাম শিপন, রুহুল আমিন, আব্দুল বারেক দেওয়ান, শহিদুল ইাসলাম, হাজি নাসির উদ্দিন প্রমুখ।
সভায় বক্তাগণ বলেন, আপনারা অবগত আছেন যে, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ প্রণিত হয় এবং উহার সংশোধনী ১৯৮৭ এর ২য় অধ্যায় মোতাবেক গঠিত হয় “বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি” (বিআরটিএ)। এর পর জানুয়ারী ১৯৮৮ সালে উক্ত বিআরটিএ এর কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানটি সেবামূলক এবং একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। শুরু থেকে বিআরটিএ লোকবল চাহিদার তুলনায় কম রয়েছে। একটি সূত্রে জানাযায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের লোকবল ৯৩১ জনের সিদ্ধান্ত থাকলেও কমবেশী ৭৫০ জনের মত রয়েছে। এখনো ১৫০- ১৮০টি দপ্তর খালি পড়ে রয়েছে। এর পরেও বিআরটিএ এর প্রতি মানুষের কিছু অভিযোগ থাকলেও সংস্থাটি যুগের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে।
সংস্থাটির লোকবলের দুর্বলতাকে পুজি করে ইতিপূর্বে ২০২০ সালে একটি অযোগ্য এবং বিভিন্নদেশে অভিযুক্ত ভারতীয় কোম্পানি “মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স কোং লিঃ” কে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্টিং এর জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয় এবং টাইগার আইটি নামে আরেকটি সংস্থা বিআরটিএ এর স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স, আর এফ আইডি নাম্বার প্লেট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু উক্ত বে-সরকারি সংস্থা পরিবহণ মালিক, শ্রমিক এবং নাগরিক সমাজ ও বিআরটিএ আশা আকাংখা পুরণ করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। উল্টো বিআরটিএ উক্ত গুরুত্বপূর্ণ খাতটির কারনে কোম্পানীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিল।
বক্তাগণ আরো বলেন, ইতিমধ্যে আশার আলো এই যে, ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ ডিজিটাল পদ্ধত্তিতে ফিটনেস প্রদানের কাজ করে যাচ্ছে। লোকবল বৃদ্ধি পেলে সবারাদেশের ফিটনেন্স প্রদানের সমস্যার সমাধান দিতে পারবে। সম্প্রতি জানতে পারলাম যে, আপনার দপ্তর তরিঘরি সময়ক্ষণ নির্দিষ্ট করে দিয়ে শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ রোধে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নতির অজুহাত দেখিয়ে ফিটনেস পরিক্ষা আউটসোসিং এর মাধ্যমে করানোর এবং সারাদেশে ব্যাঙ এর ছাতার মত গড়ে উঠা বেসরকারি ড্রাইভিং স্কুল এর নিকট প্রশিক্ষণ দায়িত্ব/সার্টিফিকেট প্রদানের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ পূর্বক কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। যার ফলে দূর্নিতি, অনিয়ম এবং শ্রমিক মালিকদের অতিরিক্ত ব্যয়বৃদ্ধি সংগঠিত হবে।
বিআরটিএ সরকারের উল্লেখযোগ্য লাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান লাভ জনক হওয়া অবশ্যই কঠিন। উক্ত বিআরটিএ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুন লোকবল একান্ত প্রয়োজন। সরকার সেই দিকে খেয়াল না রেখে এই শতভাগ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠানের নিকট নতুন করে জিম্মি করার পায়তারা চালাচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাথে সাথে অবিলিম্বে লোকবল বৃদ্ধির মাধ্যমে বিআরটিএ প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্বলতা ও পরনির্ভরতা কাটিয়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার আহবান জানান।

