রুপসীবাংলা৭১ অন্যান্য ডেস্ক : ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার নারী ব্যারাকে ঢুকে এক নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই থানায় কর্মরত সাফিউর রহমান নামে আরেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৬ মাসে একাধিকবার ওই নারী সদস্যকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এর প্রতিকার চেয়ে গত ৫ দিন ধরে ঘুরেও থানায় মামলা করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী পুলিশ সদস্য। অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ওসিসহ জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী ওই নারী গণমাধ্যমকে জানান, গত রমজানে ঈদের পরে ব্যারাকের রুমে থাকার সুযোগ নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে সাফিউর। ওই ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন। বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন অভিযুক্ত। ভুক্তভোগী ওই নারী আরো বলেন, সেই ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আমাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করতে থাকে থানা ব্যারাকে।
গত ১৫ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকেও সাফিউর থানা ব্যারাকের আমার রুমে ঢুকে আমাকে ধর্ষণ করে। সেদিন ধর্ষণের পর রাত ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে সে আমার রুম থেকে বের হয়।তিনি বলেন, একপর্যায়ে সে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। তবে তাকে বিয়ের কথা বললে বা শারীরিক সম্পর্কে বাধা দিলে তাকে মারধর করে সাফিউর।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, বিষয়টি গোপনে সমাধানের জন্য ১৬ আগস্ট দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. ইবনে ফরহাদকে জানালে তিনি ওসি তদন্ত আল-আমিন হোসেনকে তা বলে দেন। তবে গ্রামের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় সাফিউরকে বাঁচানোর চেষ্টা শুরু করেন ওসি তদন্ত। সেকেন্ড অফিসার ইবনে ফরহাদ ও ওসি তদন্ত আল-আমিন হোসেন মিলে তখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেনকে আমার নামে বিভিন্ন বাজে কথা বলেন। ওসি তখন সার্কেল স্যারকে বিষয়টি জানান। পরে ১৭ আগস্ট এ বিষয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করতে গেলেও ওসি মামলা নেননি বলে অভিযোগ করেন এই নারী পুলিশ সদস্য।
তার অভিযোগ, বিষয়টি মীমাংসা করতে তাকে টাকা প্রলোভন দেখানো হয়। তাতেও রাজি না হওয়ায় সোমবার তাকে সিসি করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। একই দিন কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সাফিউরকেও সিসি দিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। পরে এডিশনাল এসপিকে বিষয়টি জানালে তাকে এসপি অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। তবে সেখানেও বিষয়টির সমাধান হয়নি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত কনস্টেবল সাফিউরের নম্বরে ফোন দিলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনেই এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি নন বলে লাইন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে ওই ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সদস্য কোনো অভিযোগ করেননি। বিষয়টি এসপি স্যার দেখছেন। আপনি এসপি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।’
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমাদের পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। এখানে থানা ব্যারাকে এমন কোনো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ নেই। কারণ একটা ব্যারাকের রুমে কেউ কেউ একা থাকে না। তার সঙ্গে অন্য পুলিশ সদস্যরাও থাকেন। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এটা প্রেমঘটিত কি না, কাউকে ফাঁসানো হচ্ছে কি না সব দেখা হচ্ছে।
সূত্র : মানবজমিন।
রুপসীবাংলা৭১/এআর