মঞ্জুর আহমেদ: পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরাম এর আয়োজনে ৫ আগস্ট শনিবার, বিকাল ৩:০০ ঘটিকায় ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাবে আব্দুস সালাম খান মিলনায়তনে পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরাম এর “২য় যমুনা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব শীর্ষক” এক গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত গোল টেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ফোরামের সভাপতি এস.কে. হাবিবুল্লাহ, সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবীর, এমপি (পাবনা-২), ফোরামের উপদেষ্টাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক এমপি পাঞ্জাব বিশ্বাস (পাবনা-৪), সাবেক এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজু (পাবনা-২), প্রফেসর ড. খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক ড. নুরুল আলম খান, সাবেক সচিব ড. মোঃ মজিবুর রহমান, সাবেক ভিসি প্রফেসর মোঃ আমিন উদ্দিন মৃধা, মোঃ আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, মোঃ কাফী সরকার, ফোরামের সহ-সভাপতিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক যুগ্ম সচিব এম. আশরাফ এ. খলিফা, ড. সৈয়দ শিবলী মাহমুদ, মোঃ আব্দুল খালেক খান, আজিজা খানম কেয়া, মোঃ আব্দুল আজিজ খান ও মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ও ফোরামের সার্বিক কার্যাবলী তুলে ধরেন পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া ।
উক্ত গোল টেবিল বৈঠকে উপস্থিত বক্তাগন বলেন- আরিচা-কাজিরহাট (খয়েরচর ২য় যমুনা বহুমুখী সেতু হতে পারে বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক। পাদ্মা সেতুর মাওয়া থেকে যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু সেতুর তীরবর্তী দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার। আর এর মধ্যবর্তী আরিচা থেকে উভয় সেতুর দূরত্ব ৫০-৫৫ কিলোমিটার। ত্রিমুখী সেতু নির্মান হলে দেশের তিন ভুখন্ডকে একত্রিত করে দিতে পারবে এবং বাংলাদেশের যোগাযোগ মাধ্যম এক ইতিহাস হয়ে থাকবে। অনায়াসেই এই সেভু বাংলাদেশের ৪৮টি জেলাকে যুক্ত করতে পারবে। ১৩ কোটি মানুষের সরাসরি যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। বলে রাখা ভালো বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি। ত্রিমুখী সেতু দিয়ে ২০-২৫ হাজার গাড়ী চলাচল করতে পারবে। এই আকৃতির ২য় যমুনা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। প্রায় ৭/৮ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে উঠবে। দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পাবে। নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে ও সেতু থেকে সরকারের বিপুল রাজস্ব আদায় হবে। ঢাকা শহরের উপর চাপ কমবে। এই সেতুতে একটি বিশেষ সুবিধা হল পদ্মা-যমুনা নদীর মিলিত (সংযোগ) স্থলে অনেক আগে থেকেই চর পড়ে অনেকটা জায়গা ভিটি হয়ে আছে। এই সেতু নির্মানে পদ্মা সেতুর মত গভীর পাইলিং এর প্রয়োজন হবে না। আর পদ্মা সেতু নির্মানে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ এই সেতু নির্মানে তা কাজে লাগাতে পারবে। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের আলোকে আমরা মনে করছি যে, এই সেতু নির্মানের ফলে নি¤œলিখিত সুফল পাওয়া যাবে :-
০১। সময় সাশ্রয়ী, অর্থ সাশ্রয়ী, জ্বালানী সাশ্রয়ী ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, ০২। অতি সহজে স্বল্প সময়ে, সাশ্রয়ী মূল্যে উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করণ হবে, ০৩। পাবনার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে, ০৪। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের জেলা সমুহের সাথে ঢাকার দূরত্ব হ্রাস ও দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন হবে, ০৫। বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর চাপ ও ঝুঁকি হ্রাস পাবে, ০৬। অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্পায়নের ফলে সকল নাগরিক সুবিধা পাওয়া যাবে, ০৭। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিসহ অনেকের কর্মসংস্থান হবে, ০৮। ঈদের সময়ে যাতায়াতের ভোগান্তি লাঘব হবে, ০৯। পায়রা বন্দর ও মংলা বন্দরের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে, ১০। প্রতি বছর নদী খনন, ফেরী ঘাট স্থানান্তর, সংস্কার ও সংরক্ষণ বাবদ সরকারের ব্যয় প্রায় ৩০০০ (তিন হাজার) কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
প্রত্যেক বক্তাই পাবনা জেলা উন্নয়ন ফোরাম কর্তৃক উল্লেখিত দাবী যৌক্তিক ও গণমানুষের প্রাণের দাবী বলে উল্লেখ করেন এবং “২য় যমুনা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়নের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি জোড় দাবী জানান।
অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হাসিবুল কবির মঞ্জু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক- মোঃ মনসুর আলম, অর্থ সম্পাদক- আব্দুল হালিম চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক- কে.এম. নাজমুল হক সুইট, প্রচার সম্পাদক মোঃ রমজান আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. ফরিদা ইয়াসমিন রুমি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. রিনা পারভীন, আইটি সম্পাদক- মোঃ মফিজ উদ্দিন কিরন বিশিষ্ট সাংবাদিক খায়রুজ্জামান কামাল, বিশিষ্ট ব্যাংকার মোঃ আনিসুর রহমান, বর্ষা চৌধুরী প্রমুখ।