নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজধানীর রূপনগরে তামান্না আক্তার (১৮) নামের এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনায় গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সাথে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্ববান জানাচ্ছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, তামান্না আক্তার (১৮) রাজধানীর রূপনগর আরামবাগ এলাকায় একটি বাসায় গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের চাকরীজীবি সৈয়দ আক্তারুজ্জামানের বাসায় কাজ করে আসছেন। ভুক্তভোগির পরিবারের অভিযোগ ঘটনার দিন ঐ বাসার গৃহকর্তার স্ত্রী অরুনিমা হত্যার উদ্যেশ্যে নয় তলা থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (পঙ্গু হাসপাতাল) ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে এ বিষয়ে ওই গৃহকর্মীর পরিবার একটি অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সা¤প্রতিক বছরগুলোতে গৃহকর্মে নিযুক্ত শ্রমিকের উপর নির্যাতন, হত্যা, ও মানবাধিকার লংঘনের মতো প্রভৃতি ঘটনা উদ্বেগজনক ভাবে বেড়ে গেছে। গৃহশ্রমিক হিসেবে যেমন তাদের রয়েছে কিছু ন্যায্য অধিকার তেমনি রয়েছে মানুষ হিসাবে মর্যাদা পাবার অধিকার। দেশব্যাপী গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় প্রণীত ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়ন না হওয়ায় দেশে একের পর এক গৃহশ্রমিকের মৃত্যু ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বিচারহীনতার কারণে দোষীরা বার বার গৃহশ্রমিকদের উপর নির্যাতনের সাহস পায়। যদি এসব ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে সেই ভয়ে আর কেউ গৃহশ্রমিকদের নির্যাতনের সাহস দেখাবে না। সুতরাং এই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিকে দ্রæত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক।গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক আরও মনে করছে, স¤প্রতি সরকার ঘোষিত ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়ন না হওয়া এবং গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তভর্ূূক্ত না হওয়ায় দেশে একের পর এক অনাকাঙ্খিত কারণে গৃহশ্রমিকের মৃত্যু ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। তাই গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক অবিলম্বে নীতি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্ববান জানাচ্ছে।