নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

0
100

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

১৪ জুন ২০২৩ (বুধবার) সকাল ১১ টায় ভ্যান গার্ড মিলনায়তন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এমপিও নীতিমালা সমূহ পুনঃবিবেচনা করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন এ সময় শিক্ষকরা বলেন  বাংলাদেশের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা একযোগে এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরা যৌক্তিক আন্দোলন করে আসছি। আমরা মনে করি এই যৌক্তিক আন্দোলনের ফসল হিসাবে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য একটি সুন্দর নীতিমালা উপহার দিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছেন। যা বাংলাদেশর শিক্ষাব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

২০২১ সালের এমপিও নীতিমালা সমূহ পুনঃবিবেচনা করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিও’র দাবিতে গত ১২/০২/২০২৩ইং তারিখে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি এবং গত ৩০/০৫/২০১৩ইং তারিখে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বরাবার স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল।

এমপিওভুক্ত হতে না পারা অবশিষ্ট নন এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ প্রায় দুই দশক বা তারও বেশী সময় বেতনহীন অবস্থায় থাকায় মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক কর্মচারীগনের ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন ধ্বংসের দারপ্রান্তে। বিনা বেতনে ২০-২৫ বছর চাকুরী করে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছেন, অনেকেই অবসর গ্রহণ করেছেন। আবার অনেকের চাকুরীর বয়স শেষ দিকে। অভাব অনটন সইতে না পেরে ঠাকুরগাঁও জেলার খনগাঁও বিশ্বাসপুর নিম্নমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক দিলীপ কুমার আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

আপনারা জানেন ২০২১ সালের এমপিও নীতিমালায় স্কুল ও মাদরাসার নীতিমালা সহনীয় পর্যায়ের হলেও কলেজের ক্ষেত্রে এমপিও নীতিমালা খুবই কঠিন হয়েছে। নীতিমালার শর্তপূরণ করা দীর্ঘ দিনের নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমপিও নীতিমালা অনুসারে শহর পর্যায়ে সহ শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি কলেজে ২৫০ জন শিক্ষার্থী ও মফস্বল পর্যায়ে ২২০ জন শিক্ষার্থী এবং মহিলা কলেজের ক্ষেত্রে শহরে ২০০ জন শিক্ষার্থী ও মফস্বলে ১৭০ জন শিক্ষার্থী থাকা আবশ্যক। বর্তমানে কলেজে শিক্ষার্থীদের ভর্তি অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে করা হয় এবং অনলাইনে শিক্ষার্থীরা ক্রমান্বয়ে ১০টি পছন্দ দিতে পারে। এমতাবস্থায় কোন সচেতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা নন-এমপিও কলেজে ভর্তির আবেদন করেন না। ফলে ২০২২-২৩ইং শিক্ষাবর্ষে অনেক কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি শূন্য। আবার কিছু কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি ১০ জনের নিচে। মফস্বল এলাকায় নীতিমালা অনুসারে কাম্য শিক্ষার্থী কলেজের পক্ষে পূরণ করা অসম্ভব। এরপরও  যারা ভর্তি হন তাদের বেশির ভাগই হতদরিদ্র, বিবাহিত ও ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থী। এতে করে কাম্য শিক্ষার্থী, কাম্য পরীক্ষার্থী ও কাম্য ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়ে ওঠে না।প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,

প্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালায় বলা হয়েছে শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী ও ফলাফলের উপর ভিত্তি করে যোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। গত ২০২১ সালের এমপিও’র ক্ষেত্রে দেখা গেছে কিছু প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার্থীর শর্ত পূরণ করার পরও বলা হয়েছে পরীক্ষার্থীর

শর্ত পূরণ করা হয়নি। কারণ সকল পরীক্ষায় যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদেরকেই পরীক্ষার্থী হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি যে সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষার উদ্দেশ্যে ফরম পূরণ করে প্রবেশপত্র গ্রহণ করে তারা সকলেই পরীক্ষার্থী। 1 অতএব যে সকল শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করে এক বা একাধিক বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যে কোন কারণবশত বাকি বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনি তাদেরকে পরীক্ষার্থী হিসেবে গণ্য করতে হবে।

এমতাবস্থায় আমরা আপনাদের মাধ্যমে আমাদের দাবিসমূহ পেশ করছি-

১. এমপিও নীতিমালার শর্তাবলী শিথিল করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করতে হবে।

২. প্রতিষ্ঠান এমপিও প্রক্রিয়া প্রতি বছর চলমান রাখতে হবে। ৩. ফরম পূরণকৃত সকল শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার্থী হিসেবে গণ্য করতে হবে।

৪. স্বীকৃতির নম্বর পুনঃবহাল করতে হবে।

৫. শূণ্য নম্বর তুলে দিয়ে প্রাপ্যতা অনুযায়ী নম্বর দিতে হবে। ৬. ডিগ্রী কলেজের নীতিমালার শর্তাবলী পুনঃবিবেচনা করে আবেদনের আওতায় আনতে হবে।

৭. সর্বশেষ তিন বছরের ফলাফল বিবেচনা করতে হবে।

আপনাদের মাধ্যমে বলতে চাই বিনা বেতনে ২০-২৫ বছরে কাম্য শিক্ষার্থী, কাম্য পরীক্ষার্থী ও কাম্য ফলাফল সম্ভব নয়। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট আমাদের আকুল আবেদন সকল শর্ত বিবেচনা করে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের পরিবার বাঁচান অন্যথায় দাবী পূরণ না হলে মানবিক আবেদন নিয়ে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবীতে অচিরেই রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নিম্নরূপ:

* আগামী ১৬/০৭/২০২৩ইং তারিখ রোজ রবিবার সকাল ১১ টায় সকল নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ঢাকায় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা।

এমপিওভুক্তির দাবী পূরণে সাংবাদিক বন্ধুগণ অতীতের মতোই আমাদের পাশে থাকবেন এই প্রত্যাশা করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে