নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশজুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের জন্য দু:খ প্রকাশ করে একটু ধৈর্য ধরতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুত, জ্বালানী ও খনিজ সম্পাদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।তিনি বলেছেন, লোডশেডিংটা আকস্মিক। এটা বেশিদিন থাকবে না। আশা করছি এ মাসের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করতে পারব।মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাটাই প্রস্তাবের ওপর বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। চলতি অর্থবছরে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ৩২ কোটি ৪৬ লাখ চার হাজার টাকা মঞ্জুরি দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তার এই দাবিতে ছাটাই প্রস্তাব দেন ১০ জন সংসদ সদস্য। তবে আলোচনায় অংশ নেন ছয়জন। বাকীরা অনুপস্থিত ছিলেন।আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আমাদের ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দরকার, কিন্তু করে ফেলেছি ২৬ হাজার মেগাওয়াট। আর আজকে উৎপাদন হচ্ছে ৭ হাজার মেগাওয়াট।
একই দলের আরেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এখন কমবেশি এক হাজার ৫০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। এই লোডশেডিং আরও বাড়বে। বিল পরিশোধ না করার কারণে পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুত বিল তো মানুষের বাকি নেই। গ্রাহকরা তো সবাই বিল দিচ্ছেন। তাহলে এই বিল কেন বাকি থাকছে? একটা হতে পারে ক্যাপাসিটি চার্জ। গণমাধ্যমে দেখেছি ৯০ হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ এসেছে। ২০ হাজার কোটি টাকা নাকি এখনও বাকি আছে। কেন এত ক্যাপাসিটি চার্জ হয়? কেন চুক্তিটা এভাবে করা হলো যে, ক্যাপাসিটি চার্জ দিতেই হবে। কেন বিদ্যুত উৎপাদনের সঙ্গে খাম্বা ও সঞ্চালন লাইন করা হলো না।তিনি আরও বলেন, বিএনপির আমলে বিদ্যুত ছিলো না, খাম্বা ছিলো। এখন বিদ্যুত আছে খাম্বা নেই। ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। টাকা সর্টেজ। মানুষ গরমে কষ্ট পাচ্ছে। শামীম হায়দার বলেন, ১৫৩ টি কেন্দ্রের সবগুলোতে কম উৎপাদন হচ্ছে। সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যের একটি জায়গা ছিলো বিদ্যুত।
সেটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেল। এ থেকেতো আমি মনে করি জনরোষের সৃষ্টি হবে।জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, দেশের জ্বালানী নিরাপত্তা ও বিদ্যুত বিভাগ হুমকির মধ্যে পড়েছে। কবে যে আবার লোডশেডিং কমবে! এখন যেভাবে বিদ্যুত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগামী ১০ বছর পরে আমাদের গ্যাসও শেষ হয়ে যাবে।জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, মানুষ বিদ্যুত পাচ্ছে না। বিদ্যুত না থাকলে দেশের অগ্রগতি থেমে যাবে। কৃষি উৎপাদন কমে যাবে। সব জায়গায় স্থবিরতা তৈরি হবে। বিদ্যুতমন্ত্রী গোটা বাংলাদেশে বিদ্যুত দিয়েছেন। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখন বিদ্যুৎ নেই। হঠাৎ করে কী হলো যে বিদ্যুত চলে গেল। আগেই যদি কয়লা বা ডিজেল আমদানি করা যেতো আজকের এই অবস্থা হতো না। তিনি বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। তড়িৎ গতিতে আমাদের কয়লা আমদানি করে বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো চালু করতে হবে।