অগ্নিকান্ড থেকে জীবন ও সম্পদ রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করা জরুরি

0
47

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকান্ডে প্রচুর মানুষের জীবন ও সম্পদ ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা অগ্নিকান্ডের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি সমবেদনা জানাই। অগ্নিকান্ডের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এই মূহুর্তেই সকলের সতর্ক হওয়া জরুরি। 

বাংলাদেশে প্রতিবছর অসংখ্য অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। অধিকাংশ অগ্নিকান্ডেরই অন্যতম কারণ- সিগারেট বা বিড়ির জ্বলন্ত টুকরা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮-২০২২ সাল- গত পাঁচ বছরে সিগারেট বা বিড়ির ফেলে দেওয়া জ্বলন্ত টুকরা থেকে ১৭ হাজার ৯৭৯টি অগ্নিকান্ড ঘটেছে। এরমধ্যে ২০২১ সালে ৩ হাজার ১৯৩টি যা মোট অগ্নিকান্ডের ১৪.৭৮ শতাংশ যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমান ১৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ২০২২ সালে একই কারণে ৩ হাজার ৮৭৮টি অগ্নিকান্ডে ক্ষতি ৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার অধিক। যা মোট অগ্নিকান্ডের ১৬.৮ শতাংশ।

বঙ্গবাজারে যে অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে তার কারণও সিগারেট বা কয়েল বলে অনুমান করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় এখনই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ। কিন্তু এই আইনে ধূমপানের স্থান রাখারও একটি বিধান বিদ্যমান রয়েছে। উক্ত ধারাকে কাজে লাগিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো সুকৌশলে বিভিন্ন জায়গায় ধূমপানের স্থান তৈরি করছে। মুলতঃ দুইটি বহুজাতিক কোম্পানির মদদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধূমপানের স্থান তৈরি করা এবং এসব স্থানে যুবকদের ধূমপানে উৎসাহিত করা হচ্ছে।  একই সাথে মানুষের জীবন ও সম্পদকে মারাত্বক ক্ষতির  সম্মুখীন করা হচ্ছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট মনে করে যে, বর্তমানে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ এর যে আইন সংশোধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে সেখানে ধূমপানের স্থান রাখার বিধান বাতিল করা জরুরি।  সকল মালিক ও মার্কেট কর্তৃপক্ষকে আমরা আহ্বান জানাই তাঁরা যেন তাদের প্রতিষ্ঠানকে ধূমপানমুক্ত রাখে। মাত্র কিছু মানুষের ধূমপানের কারণে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ এবং মানুষের জীবনকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দেওয়া কোনভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না।  ধূমপানের স্থান নিষিদ্ধ হলে শুধুমাত্র সম্পদই রক্ষা পাবে না, এতে অধূমপায়ীরাও স্বাস্থ্যগত সুবিধা পাবে। মার্কেট কর্তৃপক্ষ এসকল আইনের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নিজেরাই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি সরকারও ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ধূমপানের স্থান বিধান বাতিলের মাধ্যমে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে ২০৪০ সালের পূর্বে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার আইন, মেট্রোপলিটন আইন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আইন অনুসারে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ধূমপান সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হোক। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট জনস্বাস্থ্য এবং সম্পদ রক্ষায় সরকারকে এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। সেই সাথে সকল মার্কেট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে