প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারীদের ভাগ্য কার হাতে

0
132

নিজস্ব প্রতিবেদকঃডিম মুরগী উৎপাদনকারী বিগ ফোর চার কোম্পানী গত ২৩ মার্চ ভোক্তা অধিদপ্তরের মিটিংএ ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রয় করলে নাকি তাদের লস গুনতে হবে? তবে কোন অজানা কারণে এখন ১৬০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছেন? এর কারণ হচ্ছে গত জানুয়ারিতে প্রান্তিক খামারীরা ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লস করে পুঁজি খামার বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এখন ব্রয়লার মুরগির ভালো বাজার দেখে প্রান্তিক খামারীগণ উৎপাদনে ফিরতে চায়। কোম্পানীগুলো ফিডের দাম বাড়িয়ে দেয় ও বাচ্চাদের দাম বাড়িয়ে দেয়।

বাড়তি দাম মেনে নিয়েও খামারীগণ ধার-কর্য্য করে খামার চালু করেন। ঠিক মুরগি যখন বিক্রয়ের উপযোগী হলো তখনই কর্পোরেট কোম্পানীগুলো হঠাৎ করে ম্যাজিকের মতো মুরগির বাজারকে তলানীতে নিয়ে আসলো। যাতে করে প্রান্তিক খামারীগণ লস করে টিকতে না পারে। তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ খামারী যেতে আবদ্ধ হয়। কর্পোরট কোম্পানীগুলোর স্বেচ্ছাচারীতায় বার বার খামারীরা মার খাচ্ছেন। যখন প্রান্তিক খামারীদের মুরগি উৎপাদনে আসে তখনই তারা বাজারের মূল্য কম রেখে খামারীদের নিঃস্ব করে দেন। এর একটা সমাধাণ হওয়া দরকার। প্রান্তিক খামারীদের ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা বর্তমানে এবং কর্পোরেট কোম্পানীদের ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদনে খরচ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। যা বর্তমানে প্রান্তিক খামারীদের ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রয় করতে হচ্ছে কোম্পানীদের বেধে দেওয়া এসএমএস এর মাধ্যমে যে মূল্য ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগিতে খামারীদের লস হচ্ছে ২৫ টাকা।

লস দিয়ে কতদিন টিকে থাকবে। এই বাজার কমিয়ে লস দিয়ে খামার বন্ধ করে দিবেন এবং সব সময় খামারীদেরকে উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিয়ে মুরগির দাম কমিয়ে দেন। যাতে করে খামারীরা উৎপাদনে কখনই ফিরতে না পারে এবং কন্ট্রাক খামারের আওতায় নিয়ে যাতে করে বার বার বাজার সিন্ডিকেট করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে পারেন সেই পথেই হাটছেন। যাহার প্রমাণ আগস্ট ২০২২ তারিখে ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লক্ষ এবং গত জানুয়ারি ৩১ তারিখ থেকে মার্চ মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত মুরগি ও বাচ্চার অযৌক্তিক দাম বাড়িয়ে গুটি কয়েক কর্পোরেট কোম্পানী হাতিয়ে নিয়েছেন ৯৩৬ কোটি টাকা। যেসকল কর্পোরেট কোম্পানী বাজার সিন্ডিকেট করে প্রান্তিক খামারীদেরকে উৎপাদন থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন এবং শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন একটা শিল্পকে দখল করতে চাচ্ছেন তাদের কঠোর শাস্তি চাই।

প্রান্তিক খামারীদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সকল সুযোগ, সুবিধা দিয়ে ন্যায্যমূল্য ব্যবস্থা করে খামারীদের বাজার প্রতিযোগিতায় রাখতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশের ভোক্তারা কর্পোরেট গ্রুপের কাছে সব সময় জিম্মি হয়ে যাবে। যার প্রমাণ ইতোমধ্যে আপনারা দেখতে পেয়েছেন।অতএব, সরকারের এখনই নজরে নেয়া দরকার এবং সমাধাণের পথ খোঁজা দরকার।সমাধাণ:পোল্ট্রি বোর্ড গঠন করেঃ প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি সাইন্স এর প্রফেসরগণ এবং পোল্ট্রি স্টোক হোল্ডারদেরকে নিয়ে পোল্ট্রি বোর্ড গঠন করুন।মুরগির বাচ্চা ও পোল্ট্রি ফিড উৎপাদন খরচ বের করে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা এবং ডিম ও মুরগির উৎপাদন খরচ বের করে বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা।প্রান্তিক খামারীদের উৎপাদিত ডিম ও মুরগির ন্যায্য মূল্য প্রতিষ্ঠা করে উৎপাদনে ধরে রাখতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে