নিজস্ব প্রতিনিধি:তামাক ও তামাকাজাত দ্রব্যের ব্যবহার অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এই মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় বাস্তবায়নে ২০৪০ সালের পূর্বেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তামাকজাত দ্রব্যের উপর উচ্চহারে করারোপের মাধ্যমে ক্রয়মূল্য ভোক্তার ক্রয় সক্ষমতার ঊর্ধ্বে নিয়ে যাওয়া জরুরি। এর পাশাপাশি এই মূল্য বৃদ্ধির সুফল পেতে হলে খুচরা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধেও কোনো বিকল্প নেই। উপরোক্ত বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে আজ ২১ মার্চ, ২০২৩ মঙ্গলবার সকাল ১১:০০ টায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), বিএনটিটিপি ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর সম্মিলিত আয়োজনে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে “তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ এবং প্যাকেটে মুদ্রিত মূল্যে তামাকজাত দ্রব্যের খুচরা বিক্রয় নিশ্চিত করার দাবীতে“একটি অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
প্রত্যশা মাদক বিরোধী সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারী জনাব হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদান করেন সেভ দি সোস্যাল পিপল(স্কোপ) এর নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, ব্যুরো অফ ইকোনোমিক্স রিসার্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, ডাস্ এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো.রবিউল আলম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, বিইআর এর প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা নাজমুন নাহার। এছাড়া উক্ত কর্মসূচিতে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাটাব, এআরকে ফাউন্ডেশন, ডরপ সহ বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও সরকারের রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে প্যাকেটের গায়ে মুদ্রিত মূল্যে সিগারেট বিক্রি নিশ্চিত করা জরুরি। প্যাকেটের গায়ে মুদ্রিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে সিগারেট বিক্রি হওয়ায় সরকার প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা এবং বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। বক্তারা সকল মূল্যস্তরের সিগারেটের ক্ষেত্রে অভিন্ন সম্পূরক শুল্ক ৬৫% করার দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর লক্ষ্য পূরণে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার পাশাপাশি তামাক দ্রব্যের উপর কার্যকর ও সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য জনসাধারণের ক্রয়সক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে করারোপ করা হয়। এতে একই সাথে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ে এবং তামাক কোম্পানীর অযাচিত লাভ এবং কর ফাঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বক্তারা বর্তমান কর ব্যবস্থার বিভিন্ন ত্রুটিপূর্ণ দিক বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান জটিল তামাক কর পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানান। পরিশেষে উপস্থিত বক্তাদের পক্ষ থেকে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধিতে কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার দাবি জানিয়ে আসন্ন বাজেটে একটি কার্যকর তামাক করনীতি প্রনয়ণের আহবান জানানো হয়।