বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির একমাত্র দাবী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মচারিগনের চাকুরী জাতীয়করণের দাবিতে সম্মেলন।

0
128

বাপ্পি এদবরঃ ১৫ মার্চ ২০২৩ রোজ বুধবার বিকাল ৩ ঘটিকায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে  মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরী জাতীয়করণের দাবীতে  সাংবাদিক সম্মেলনে করা হয় স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই সাথে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদকে এবং শ্রদ্ধাবনতঃশীরে স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। সেই সাথে ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবার সহ সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

ইতোমধ্যেই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেছি। আমাদের স্বাধীনতার মূল চেতনা ছিল বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই এই বৈষম্য দূরীকরণে সরকার সচেষ্ট হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে এখনো বৈষম্য রয়ে গেছে। আজও আমাদের দেশে সরকারি এবং বেসরকারি নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে দ্বিধাবিভক্ত করে রাখা হয়েছে। যেখানে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা একই এবং একই সিলেবাস ও কারিকুলামে পাঠদান করে থাকেন। সেখানে বেতন-ভাতার এই অসম পার্থক্য মেনে নেওয়া যায়না।আমরা আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এই কারণে যে, তিনি ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণকে সয়ংক্রীয়ভাবে অন্তর্ভূক্ত করেছেন এবং ৫% ইনক্রিমেন্ট প্রদান করেছেন। কিন্তু তারপরেও স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করা একজন শিক্ষকের বেতনমাত্র ১২৫০০ টাকা, ১০ বছর চাকুরি করার পরে একটি উচ্চতর স্কেল এবং ১৬ বছর চাকুরি করার পরে আরো একটি উচ্চতর স্কেল প্রদান করেও একজন শিক্ষকের সর্ব-সাকুল্যে বেতন দাঁড়ায় ২২০০০/- বা ২৩০০০/-টাকা মাত্র। ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল প্রদান করা হলেও প্রায় ৮ বছর পেরিয়ে গেছে এখনো নতুন কোন পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়নি। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে সামান্য বেতনে শিক্ষক কর্মচারীগণের সংসার চালানো এবং সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। শিক্ষক সমাজ আজ ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।

২০০৪ সালে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণদের ২৫% উৎসব ভাতা প্রদান করা হলেও প্রায় ১৮ বছরে তা আর বাড়েনি।বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রদান করা হয় ১,০০০/- টাকা। চিকিৎসা ভাতা বাবদ প্রদান করা হয় মাত্র ৫০০/- টাকা ।৫% ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হলেও অবসর ও কল্যাণ ভাতার জন্য অতিরিক্ত ৪% সহ মোট ১০% টাকা কেটে নেওয়া হয়। আমাদের সন্তানদের জন্য কোন শিক্ষাভাতা প্রদান করা হয়না। অবসর ও কল্যাণ ভাতার টাকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তিন থেকে চার বছর অপেক্ষা করতে হয়। নাই কোনো অবসর পদ্ধতিমূলক PRL ব্যবস্থা।

উপরের প্রত্যেকটি সমস্যা নিরসনের একমাত্র পথ হলো বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরি জাতীয়করণ। বেসরকারি স্কুলের ছাত্র বেতনসহ সকল আয় সরকারের কোষাগারে জমা নিয়ে সেই টাকা দিয়েই শিক্ষক-কর্মচারিগণের চাকুরি জাতীয়করণ করে বেতন-ভাতাদি দেওয়া সম্ভব বলে আমরা মনে করি। প্রায় ১৫ বছর যাবৎ মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক মেহনতি মানুষের কল্যাণে সরকার দৃশ্যমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আমরা আশা করেছিলাম জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের চাকুরি জাতীয়করণের ঘোষণা দিবেন, কিন্তু আমরা আশাহত হয়েছি। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি আগামী ২০২৩-২৪ জাতীয় বাজেটেই বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীগণের চাকুরি জাতীয়করণের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয়কে নির্দেশনা প্রদান করবেন এবং সেই লক্ষ্যে আগামী ঈদ-উল-ফিতরের পূর্বেই পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস প্রদানের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

পরিশেষে, জাতির বিবেক প্রিয় সংবাদিকবৃন্দকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির আহবানে আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সহযোগিতা করার জন্য কৃতজ্ঞতা সহিত অশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সেই সাথে জাতীয়করণের এই আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করার জন্য আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে শেষ করছি। একই সাথে নিম্নোক্ত কর্মসুচি ঘোষণা করছি-১। আগামী ২০/০৩/২০২৩খ্রি: তারিখ প্রতিটি জেলায় মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি পেশ।২। জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শিক্ষক-কর্মচারীগণের চাকুরি জাতীয়করণ ঘোষণা ও অর্থ বরাদ্দ না হলে ঈদ পরবর্তীতে মাধ্যমিক স্তরের সকল শিক্ষক সংগঠনের সমন্বয়ে মহাসমাবেশ এর মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে