নিজস্ব প্রতিনিধিঃ‘শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ কর’ শ্লোগানে ভুলে ভরা পাঠ্য-পুস্তক বাতিলসহ সকল জাতি সত্তার স্ব স্ব মাতৃভাষার পাঠদান নিশ্চত করতে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে রাঙামাটির কুদুকছড়িতে ছাত্র সমাবেশে করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।
আজ ২১ফেব্রুয়ারি ২০২৩, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে পিসিপি’র রাঙামাটি জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক আনন্দ চাকমার সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক ঝিমিত চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিমি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা শাখার সদস্য কার্বন চাকমা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এক জাতির দেশ নয়। এখানে বাঙালি ছাড়াও ৫০টির অধিক ভিন্ন ভাষাভাষী জাতিসত্তার বসবাস রয়েছে। কিন্তু এদেশের সরকার ও শাসকগোষ্ঠি বাঙালি ভিন্ন অন্য জাতিসত্তাগুলোকে স্বীকার করতে চায় না। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে ও ২০১১ সালের ৩০ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে সকল জাতিসত্তাগুলোর ওপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ঘৃণ্য নজির স্থাপন করেছে।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৫২ সালেন ২১ ফেব্রুয়ারি যে চেতনার ভিত্তিতে তৎকালীন ছাত্র সমাজ ভাষার দাবিতে আন্দোলনে করেছিল, জীবন বিসর্জন দিয়েছিল সে চেতনা আজ ভুলুণ্ঠিত। এই রাষ্ট্র দেশের সংখ্যালঘু ভিন্ন ভাষাভাষী জাতিসত্তাগুলোকে নিশ্চিহ্ন করার নানা পাঁয়তারা জারি রেখেছে। প্রতিনিয়ত অন্যায় দমন-পীড়ন, ভুমি বেদখল, নারী নিযার্তন, খুন, গুম, হত্যাসহ নানা ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। দেশে বসবাসরত জাতিসত্তাগুলোরর স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের অধিকার বাস্তবায়ন করছে না।
বাংলাদেশে জাতিসত্তাগুলো ভাষা আজ চরম হুমকিতে রয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, যে জাতি ১৯৫২ সালে নিজেদের ভাষার স্বীকৃতি আদায়ে আন্দোলন করেছিল, সেই জাতি আজ অন্য জাতিসত্তাগুলোর ভাষার স্বীকৃতি দিতে চায় না। স্কুল, কলেজের ছাত্র/ছাত্রীদের শেখানো হয় আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। সরকার ৫টি জাতিসত্তার ভাষায় মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগ নিলেও উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ায় তা মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে। এই থেকে প্রমানিত হয় জাতিসত্তাগুলোর মাতৃভাষা ধ্বংসের সরকারের সুদূর প্রসারি ষড়যন্ত্র রয়েছে।সমাবেশ থেকে বক্তারা দেশে বসবাসরত ভুলেভরা পাঠ্যবই বাতিলসহ সকল জাতিসত্তার স্ব স্ব মাতৃভাষার পাঠদান নিশ্চত করা এবং পিসিপি’র শিক্ষা সংক্রান্ত ৫ দফা দাবি পূর্ণ বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।