“ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও মুক্তির সংগ্রাম”- শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

0
32

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের উদ্যোগে “ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও মুক্তির সংগ্রাম”- শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান লাল্টুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী রেহান সোবহান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান, উপাচার্য, ডুয়েট ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, সাবেক উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেসিডিয়াম সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, অধ্যাপক আ ব ম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, লেখক ও কলামিস্ট ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অজিত কুমার সরকার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব  মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত ইসলাম খোকন, ঢাকা মহানগর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সরদার মাহমুদুল হাসান রুবেল প্রমুখ।
লেখক কলামিস্ট অজিত কুমার সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতীয়তাবাদী মহান নেতা ছিলেন। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই এই দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ হরতালের নেতৃত্ব দেন।
ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের গৌরবময় ইতিহাস জানতে হবে। ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তানে দুটি রাষ্ট্রভাষা হবে, একটি বাংলা ও উর্দু। এটি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে সাংবিধানিক আইনে পরিণত হয়। পাকিস্তানের গণপরিষদের আইনসভায় ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবি উত্থাপন করেন।
ডা. শারফুদ্দিন বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই এসেছে আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতা। আজ পৃথিবীর সকল দেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষাসৈনিক, ভাষা সংগ্রামী ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তক ছিলেন। আজ আমরা গর্বিত জাতি যে, ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসটি স্বীকৃতি দিয়েছে এবং পৃথিবীর সকল দেশে পালিত হচ্ছে।
অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, মাতৃভাষার মাধ্যমে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা ও অধ্যয়ন করে পৃথিবীতে অনেক জাতি আজ উন্নত ও সমৃদ্ধ এবং সভ্য জাতিতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর ৬০ কোটি মানুষের আজ মুখের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষার অবস্থান পৃথিবীতে পঞ্চম। আমাদের সংগ্রামী ইতিহাস জাতিসংঘ পর্যন্ত প্রসংসা করেছেন। অথচ বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের উদাসিনতা রয়েছে। হাইকোর্টের রায় বাংলায় দেওয়ার আইন হলেও ১১ বছর পার হলেও তা তেমন কার্যকর নেই। বর্তমান সরকার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় বিনামূল্যে বই বিতরণ করছেন এবং মাতৃভাষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু জেল খেটেছেন অথচ নতুন প্রজন্মকে বলা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাষা আন্দোলনে তেমন অবদান নেই।
অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, কোন জাতিগোষ্ঠী বা দেশকে দুর্বল রাখতে এবং দীর্ঘদিন শাসন-শোষন চালানোর হাতিয়ার হচ্ছে ভাষা ও ধর্ম। এত বছর পার হলেও আমরা আমাদের শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। ইংরেজী ভাষা চর্চা করতে হবে, তবে বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা করে নয়। তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, আমাদের অবশ্যই নিজ ভাষার উপর গুরুত্ব দিতে হবে এবং বিশ্বের উন্নত দেশগুলো তাদের মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করে সাফল্য পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম অর্থ সম্পাদক মোঃ নূর উদ্দিন চৌধুরী, কার্যকরী সদস্য ইবনে হোসেন জামান, তারেক ইমতিয়াজ খান প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে