গৌতম কুমার এদবরঃ ৩ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার সকাল ১১ টায় ঢাকায় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল (ধানমন্ডি) অডিটোরিয়াম এ প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদী সভায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নুরতাজ আরা ঐশি। প্রতিবাদী সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-ভাসানী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবু,নঈম সিদ্দিকী,ড.দিলারা চৌধুরী,ফরহাদ মাজাহার,আব্দুর রহিম,জাহানার প্রমুখ। নুরতাজ আরা ঐশি তার লিখিত ব্যক্তব্যে তাদের অধিকার ভাষানটেক এলকায় সভা সমাবেশ করার আবেদন করে অনুমতি না পাওয়ায় অধিকার আদায়ে ৬ দফা দাবী পেশ করেন এবং এসকল দাবী দাওয়া বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।প্রতিবাদী এ সভা থেকে সকল সাংবাদিক সমাজের কাছে মিডিয়াতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ সহ সকল রাজনৈতিক ব্যাক্তি ও সুশীল সমাজকে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে থাকার অনুরোধ জানান।
নুরতাজ আরা ঐশি লিখিত ব্যক্তব্য থেকে জানা যায় মোহাম্মদ আব্দুর রহিম শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সন্তান। দুটি বিষয় নিয়ে আজ আপনাদের সামনে এসেছি। ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প এবং ঢাকার বিজয় সরণিস্থ কলমিলতা বাজার নিয়ে দীর্ঘদিনযাবৎ চলে আসা অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরূদ্ধে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে আসছি। গত ১১ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন, ৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে আলোচনা সভা এবং ১৫ নভেম্বর জাতীয প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। যার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে।
অপনারা অবগত আছেন যে, ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পটি নিয়ে ১৯৯৭ সাল থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠান নর্থ-সাউথ প্রপার্টি (এনএসপিডিএল) কাজ করে আসছে। এটি একটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ অর্থাৎ সরকারী টাকা ছাড়াই এনএসপিডিএল এর বিনিয়োগে পাইলট প্রকল্প হিসেবে যা বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক “একনেক” সভায় ১৯৯৮ সালে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির অবস্থান মিরপুর ১৪, ভাষানটেক থানার আওতাধীন ১৫০ বিঘা জমির উপর অবস্থিত। প্রকল্পটি শুরুর পর থেকেই সরকারের ভিতরের একটি অংশ সবসময়ই এই প্রকল্প বাস্তবায়নে নানাভাবে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করে আসছে। এমনকি প্রকল্পটির সম্ভাবনাকে গলা টিপে হত্যা করার মিশনে নেমেছে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন তাই মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পদত্যাগসহ আমরা কলমিলতা বাজার ও ভাষানটেক প্রকল্পে জড়িত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে লড়াই-সংগ্রাম করছি। তারই ধারাবাহিকতায় বিজয়ের মাসে ডিসেম্বর মাসব্যাপী ভাষানটেক থানাধীন এলাকায় পথসভা ও মানববন্ধন করতে ২১ নভেম্বর পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করি। অনুলিপি ডিসি ও ওসির কাছেও দেই। আমরা অনুমতি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বারবার যোগাযোগ করেছি। তারপরও এখন পর্যন্ত আমাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। একটি স্বাধীন দেশে রাজপথে নেমে অধিকার চাওয়া আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকার থেকেও আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বঞ্চিত হচ্ছি। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমনিতেই মেয়র আতিক ও ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতি ও অদক্ষতার কারণে আমরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। মানবাধিকারও লঙ্ঘন হচ্ছে। আমাদের পিঠ দেয়া ঠেকে গেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচী পালনে পুলিশি নিরাপত্তা ও অনুমতি না পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণসহ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
প্রথমত যেহেতু সরকারি টাকা ছাড়াই প্রকল্প, এটা কিভাবে সম্ভব! এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রকল্প বিরোধীরা মনে করে বাংলাদেশের সরকারি টাকায় যে সকল প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হাজারো অনিয়ম-দুর্নীতি বিদ্যমান রয়েছে, তা জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে এবং সরকারি টাকায় প্রকল্প করার পরিকল্পনাকে নিরুৎসাহিত করবে। যার ফলে একটি নতুন দিনের সূচনা হবে। দ্বিতীয়ত, দেশের কমবেশি ১০ লক্ষ বস্তিবাসী ও নিম্নআয়ের পরিবাররা ভাষানটেক প্রকল্পের সফলতার কারনে অনুরূপ আরো প্রকল্প গ্রহনের মাধ্যমে বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিকভাবে যে পরিবর্তন আসবে, তা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকারগুলো ভালো চোখে দেখছে না। এর অন্তর্নিহিত কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলো যে এতোদিন বস্তিবাসীকে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যবহার করে আসছিল সেটা আর পারবে না। এই কারনে সরকারগুলো চায় না যে বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়ন হোক।

ভাষানটেক প্রকল্পে যে আধুনিক সুযোগ সুবিধাগুলো রাখা হয়েছে তা বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বে একটি রোল মডেল সৃষ্টি করা সম্ভব। এই প্রকল্পটির সকল কাজ সরকারের বিধি মোতাবেক অনুমোদনের মাধ্যমে করা হয়েছে। এই প্রকল্পের প্রতিটি ভবন রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত। সমস্যা সৃষ্টির পর থেকে প্রকল্প সংক্রান্ত ভূমি মন্ত্রণালয় কখনোই সঠিক তথ্য মিডিয়া ও জনগণকে প্রদান করেননি; বরং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো মিডিয়ার সামনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। প্রকল্পের রূপকার আমার বাবা জনাব আলহাজ্ব আবদুর রহিম ও নর্থ-সাউথ প্রপার্টির ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে এবং এক পর্যায়ে অস্বীকার পর্যন্ত করা হয়েছে। আমার বাবার সৃষ্ট এই প্রকল্প সফলতা পেলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের প্রতিষ্ঠান ও আমার বাবা পেতেন; তথা এই স্বীকৃতি শুধু আমার বাবার জন্য নয় এটি দেশের জন্যও বড় একটি অর্জন ছিলো, যা আমরা এখনো বিশ্বাস করি।
ক) এটি একটি (পাইলট) পরীক্ষামূলক প্রকল্প। এই প্রকল্পে সরকারের একটি টাকাও বিনিয়োগ করা হয়নি। পুরো প্রকল্পটি আমার বাবা তার নিজের সম্পদ বিক্রি করে গড়ে তুলেছেন।
খ) নর্থসাউথ প্রপার্টি একটি বিনিয়োগ ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা। এটি একটি পিপিপি অর্থাৎ সরকারি বেসরকারি অংশীদার প্রজেক্ট।
গ) সরকারের সাথে ২০০৩ সালে করা চুক্তি বাতিলের কোনো শর্ত নেই। সরকার চাইলেও কোন শর্ত কিংবা চুক্তি বাতিল করতে পারবে না।
ঘ) ২০১০ সালে প্রকল্প থেকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী কায়দায় এক কাপড়ে নর্থ-সাউথ প্রপার্টি লিমিটেডের চেয়ারম্যান তথা আমার বাবার পরিবার এবং তার কর্মচারীদেরকে প্রকল্প থেকে অন্যায়ভাবে গায়ের জোরে বের করে দেওয়া হয়। অতঃপর আমার বাবা তথা নর্থ সাউথ প্রপার্টি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জনাব আব্দুর রহিম সাহেবের রেখে যাওয়া বিশাল মালামাল ও অর্থ-সম্পদ আজও লুটপাট করে যাচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প বিরোধী একটি চক্র।
ঙ) এনএসপিডিএল এর চেয়ারম্যান তথা আমাদের পরিবারকে ২০১০ সালে দেশ ছাড়া করা হয়। এমনকি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আমার বাবা আব্দুর রহিম দেশে আসলে, সঙ্গে সঙ্গেই তাকে র্যাব দিয়ে গুম করা হয়। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের পাবলিক রিলেশন অফিসার ইসমাইল হোসেন বাতেনকে ২০১৭ সালে গুম করা হয়। এরপর থেকে এখনো তাকে আর ফিরে পাওয়া যায়নি। তার পরিবার ইসমাইল হোসেন বাতেনকে ফিরে পেতে এখনো পথপানে চেয়ে থাকে। এই গুমের পিছনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী কর্ণেল ফারুক ও প্রকল্প বিরোধী একটি চক্র জড়িত।
চ) যেহেতু এই প্রকল্পটির রূপকার আমার বাবা জনাব আলহাজ আব্দুর রহিম সেহেতু সরকার চাইলেও এরকম একটি পরিকল্পিত প্রকল্প জনাব রহিমকে বাদ দিয়ে করতে পারবে না। বস্তিবাসী, শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের খেটে খাওয়ার মানুষদের জীবনমান উন্নয়ন হোক এটা সরকারগুলো কোনভাবে চান না। তারা মনে করেন এদের জীবনমান উন্নয়ন হলে, এই বস্তিবাসীকে দিয়ে তারা তাদের অপকর্ম করাতে আর পারবেন না।
ছ। মিডিয়াকে বর্তমানে এই সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। মিডিয়া চাইলেও অনেক সময় সঠিক তথ্য জাতির সামনে প্রকাশ করতে পারে না। তবে মিডিয়ার উচিত এই প্রকল্প আদ্যোপান্ত জাতির সামনে প্রকাশ করা।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, ঢাকার বিজয় সরণিস্থ কলমিলতা বাজার। এই কলমিলতা বাজারটির প্রকৃত মালিক আমার বাবা। আজ অবধি ডিএনসিসি ও তার পূর্বসূরিগণ পরস্পর পরস্পরের যোগসাজশে আইনের অপপ্রয়োগ করে জবরদখল করে রেখেছে। যদিও মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্ট আমাদেরকে দুই মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। এক পর্যায়ে ২০১৭ সালে তৎকালীন
প্রয়াত মেয়র জনাব আনিসুল হক কোর্টের আদেশ মেনে উক্ত সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ডিসি ঢাকাকে লিখিত প্রস্তাব পাঠান কপি সংযুক্ত ১। ইতঃবৎসরে, মেয়র আনিস পরলোকগমন করেন। এই সুযোগকে ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম দুর্নীতির মানসিকতায় ডিসি ঢাকাকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের চাহিদাপত্র না দিয়ে বছরের পর বছর সময়ক্ষেপণ করছেন। ডিসি ঢাকা কর্তৃক মেয়র আতিকের কাছে প্রেরিত তাগীদপত্র (২,৩) সংযুক্ত করা হলো। এই পত্রগুলোর মধ্যে যে তথ্য রয়েছে তা আমাদের দাবীর স্বপক্ষে প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
মেয়র আতিক কেন এই ক্ষতিপূরণ প্রদানে ও সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ পালনে অনীহা দেখাচ্ছেন? এর দুটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণটি হলো- আমার বাবা আলহাজ্ব আব্দুর রহিম ডিএনসিসির উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে জনাব আতিকের সাথে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করেছেন। ভবিষ্যতেও আমার বাবা পুনরায় নির্বাচন করবেন, এই বিষয়টি মাথায় রেখে জনাব আতিকুল ইসলাম আমার পরিবারের লালমাটিয়ায় দুটি ফ্ল্যাট, সাভারের কলমা মৌজায় একটি বাগানবাড়ি অবৈধভাবে দখল ও নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। অন্যদিকে এ যাবৎ কালে কলমিলতা বাজারে আমাদের পাওনা ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন। দ্বিতীয় কারণটি হলো- মেয়র আতিক ও ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের একটি মোটা অংকের ঘুষ দাবী করছেন আমার বাবার কাছ থেকে।এদিকে, ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম গত ২৩ অক্টোবর পুনরায় কমলিলতা মার্কেটের ভূমি অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে ডি এন সি সি বরাবর একটি তাগিদ পত্র প্রদান করেছেন।
মোঃ আব্দুর রহিম একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। তিনি তার সারা জীবনে অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই ও সংগ্রাম করে আসছেন। মেয়র আতিক ও ডিএনসিসির এই অবৈধ দাবির কাছে আমার বাবা কখনোই মাথা নত করেননি বলে তিনি এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের পুরো প্রক্রিয়াটিকে ঝুলিয়ে রেখেছেন। আমরা ভাষানটেক প্রকল্প এবং কলমিলতা বাজার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে সর্বশান্ত হয়ে গেছি। এমতাবস্থায়, ন্যায় প্রতিষ্ঠার এই লড়াইকে সফল করতে দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
আমরা উপরের এই দুটি বিষয়কে লড়াই ও সংগ্রামের মাধ্যমে আদায় করা ছাড়া আর কোন উপায় না দেখে, আমরা ছয় দফার ভিত্তিতে আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। যদিও আমরা বর্তমানে আতঙ্কে আছি। কারণ, বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি যাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করছি তারা যেকোনো সময় আমাদেরকে হামলা-মামলার শিকার করতে পারে। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্র্তপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
৬ দফা নিম্নরূপ-
১) মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের বাঁধাসমূহ দূর করা এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম কর্তৃক কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের যথাযথ নির্দেশ ও সেই নির্দেশ প্রতিপালনে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা।
২) ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক এনএসপিডিএল এর চুক্তি বাতিল আদেশ অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা করা।
৩) ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রের দায়ে ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা ।
৪) ভূমি মন্ত্রণালয় ও এনএসপিডিএল এর মধ্যে যাবতীয় বিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি পত্রের ষষ্ঠ অধ্যয় ও ৬.১৫ ও ৬.১৭ ধারা ও মাননীয় হাইকোর্টের রিট পিটিশন ৭৭৯/২০১০ নম্বরে অবজারভেশন অনুযায়ী সালিশি বোর্ডের মাধ্যমে সমাধান করা।
৫) ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প সংক্রান্তে দুর্নীতি দমন কমিশন তথা দুদকের বন্ধ হওয়া তদন্ত কার্যক্রম পুনরায় চালু করা। সেইসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও জনাব আতিকের বিরুদ্ধে গত ১৯/৫/২০২১ইংতারিখে দায়েরকৃত অভিযোগটি তদন্ত পূর্বক জরুরী ভিত্তিতে আমাদের প্রতিবেদন জাতির সামনে তুলে ধরা।
৬) শহীদ পরিবার হিসেবে আলহাজ্ব আব্দুর রহিম সাহেবের পরিবারবর্গের জানমাল ও সম্পদের সুরক্ষা প্রদান করা। একইসাথে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সরকারি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে আমার পরিবারকে প্রদান করা এবং মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
এই বিষয়গুলো নিয়ে বেশ কয়েকবার মিডিয়াতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করে ছিলাম। একপর্যায়ে আমরা আমাদের তেজগাঁও এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান কামাল মহোদয়ের সঙ্গে একাধিকবার উপরোক্ত বিষয়গুলো সমাধানের জন্য সাক্ষাত করেছি । তিনি বারবার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন এবং জনাব মেয়র আতিককে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বিষয়টি এখন পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে কোনো এক অজানা কারণে।
আমরা একান্ত নিরুপায় হয়ে আবারো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ও আলোচনা সভার মাধ্যমে জানাতে চাই, আপনি দয়া করে এই শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দুইটি বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে সমাধানের জন্য নির্দেশ দিবেন এবং আমাদের ৬ দফা দাবী মেনে নিবেন। আমরা সারাদেশের বস্তিবাসী ও শ্রমজীবী মানুষদের পুনর্বাসনে সরকারি টাকা ছাড়াই ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প শুরু করি। এই প্রকল্পের ধারণা নিয়ে আমাদের ন্যায় অন্যান্য দেশও বস্তি সমস্যা সমাধান করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে শুধু দরকার সরকারের সহযোগিতা ও আন্তরিকতা। এই চ্যালেঞ্জে আমরা ভাষানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়েছি এবং আমাদের কর্মের সফলতা আমরা দেখিয়েছি ২০১০ সাল পর্যন্ত। এই প্রকল্পকে ঘিরে সরকার ১২ বছর আমাদের সাথে যা করেছে তা কোন স্বাধীন দেশে কেউ কোনদিন চিন্তাও করেনি। তাই দেশবাসী, উপস্থিত আজকের আলোচকবৃন্দ এবং সাংবাদিক ভাই-বোন ও মিডিয়ার নিকট আমাদের প্রার্থনা-
১) আপনারা আমাদের উল্লেখিত উপস্থাপিত বিষয়গুলির উপর অনুগ্রহ করে যথাযথ ভুমিকা রাখবেন। এ ক্ষেত্রে মিডিয়াতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশসহ টকশোর মাধ্যমে জাতির সামনে তুলে ধরার ব্যবস্থা নিবেন।
২) দেশের সকল রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, একাডেমিকাল ব্যক্তিত্ত ও সচেতন নাগরিক সমাজ এই ব্যাপারে আমাদের ৬ দফা দাবীর পক্ষে আমাদের শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করছি।
আমরা কথা দিচ্ছি-আমাদের ডিএনসিসির কাছে প্রাপ্য ৪ হাজার কোটি টাকা উদ্ধার শেষে এদেশের গরীব দুঃখী মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্যই ভাষান্টেক পুনর্বাসন প্রকল্পের ন্যায় আমরা নতুন নতুন প্রকপ্লের অতীতের ন্যায় বিনিয়োগ করবো আপনাদের কল্যানে। তাই আসুন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাই। পরিশেষে মেয়র আতিক এবং ভূমিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। আজ থেকে কোনো বস্তি উচ্ছেদ মেনে নেওয়া হবে না। আমার বাবা আলহাজ্ব আব্দুর রহিম ও তার পরিবার বস্তিবাসীর পাশে সবসময়ই আছে এবং থাকবে।