গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থনের আহ্বান

0
74

রুপসীবাংলা৭১

নিজস্ব প্রতিনিধিঃগৃহশ্রমিকদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ’ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৮৯ দ্রুত অনুসমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন ট্রেড ইউনিয়ন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আজ ১ ডিসেম্বর ২০২২ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে “আইএলও কনভেনশন ১৮৯  এর ১১ বছর : সম্ভাবনা ও ভবিষ্যত করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ দাবি জানান।

বিলস্ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শাহ মোঃ আবু জাফর এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন নাহার ভূইয়া, এমপি। গৃহশ্রমিকদের অধিকার, মর্যাদা ও সুরক্ষায় নিশ্চিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুন নাহার ভূইয়া, এমপি বলেন, গৃহশ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় সবার আগে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি বলেন, নারীর অধিকার কোন দয়া নয়, এটি তার প্রাপ্য। গৃহশ্রমিকরাও আমাদেরই বোন বা আত্মীয় স্বজন তাই তাদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে কাজ করতে হবে। শ্রম আইন সংশোধন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভূক্ত করতে এবং আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে বিলস্ যুগ্ম মহাসচিব ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান বলেন, গৃহশ্রমিকদেরকে করুন অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে ট্রেড ইউনিয়নকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে মাঠে নামতে হবে। গৃহশ্রমিক নীতিমালকে আইনে পরিনত করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।গৃহশ্রমিক অধিকার ও প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যে কিনা গৃহশ্রমিকদের জন্য নীতিমালা করেছে। কিন্তু এর বাস্তবায়ন নাই। আশা করি সরকার এতে মনোযোগ দেবে।

আইএলও বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর এ্যান ড্রং বলেন, আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থনে সরকারের সদিচ্ছা আছে। কিন্তু তার কিছু পূর্বপ্রস্তুতিও রয়েছে। সরকার সে ব্যাপারে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করা যায়।গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাদের সংগঠিত করার বিকল্প নাই উল্লেখ করে জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিলস্ যুগ্ম মহাসচিব খান সিরাজুল ইসলাম বলেন, গৃহশ্রমিকদের সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই গৃহশ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা সম্ভব।

জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা বলেন, গৃহশ্রমিকরা যতদিন না শ্রম আইনে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেন ততদিন পর্যন্ত তাদের সুরক্ষায় নীতিমালায় যে সমস্ত নির্দেশনা উল্লেখ আছে সেগুলো প্রয়োগে সরকারকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব ও বিলস্ পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন বলেন, গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা ২০১৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় গৃহশ্রমিকদের পূর্ণাঙ্গ নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্ট্রি করেছে। নীতি বাস্তবায়নের সাথে সাথে গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষা বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থন করলে গৃহশ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে বিলস্ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শাহ মোঃ আবু জাফর বলেন, আইএলও’র যে অধিবেশনে এ কনভেনশনটি গৃহীত হয়েছে সে অধিবেশনের সভাপতি ছিল বাংলাদেশ, তাই এ কনভেনশন অনুসমর্থন করা অত্যন্ত জরুরী।এসময় অন্যান্য বক্তারা আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন করাসহ সারাদেশে গৃহশ্রমিকদের নিরাপত্তা রক্ষায় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’ বাস্তবায়ন, শ্রম আইনে গৃহশ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করা, গৃহশ্রমিকদের মামলায় সরকারিভাবে আইনি সহায়তা প্রদান, সব গৃহশ্রমিকের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা এবং গৃহশ্রমিকদের নির্যাতন থেকে রক্ষা ও প্রকৃত অবস্থা যাচাই করতে নিবন্ধন ও পরিদর্শন কার্যক্রম চালু করার আহ্বান জানান।

গোলটেবিল বেঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেশন কমিটি ফর  ওয়ার্কার্স এডুকেশন (এনসিসিডব্লিউই) চেয়ারম্যান শামীম আরা, বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক বাদল খান, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ। এছাড়া বিলস্ ও গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কভূক্ত মানবাধিকার সংগঠন, জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে