নিজস্ব প্রতিনিধি:- স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ রমনা কালিমন্দির সংস্কারের পরিবর্তে ১৯৭৩ সালের ১৩ মে বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছিল সরকার। মৃত শত্রæ সম্পত্তি আইন পূনরুজ্জিবীত করে ভিন্ন নামে ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই সংসদে পাশ করিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৬ লক্ষ একর সম্পত্তি দখল করে নেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন দাবী দাওয়াই মেনে নেয়নি কোন সরকার। উপরন্তু জাতীয় বাজেটে বরাবরই হিন্দু সম্প্রদায়কে বঞ্চিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইসিটি এ্যাক্ট নামে বøাসফেমি আইন করে ধর্ম অবমাননার অযুহাতে প্রতিনিয়ত হিন্দু ছেলে মেয়েদেরকে মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের গুটিকয়েক দালাল চাটুকারদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দেশকে হিন্দু শুন্য করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
যেহেতু আওয়ামীলীগ সরকার সকল দলের থেকে এমনকি ইসলামী দলগুলো থেকেও ইসলাম প্রচারে প্রসারে বেশী ভূমিকা রেখেছে এবং এখনো রাখছে; সেজন্য ভবিষ্যতের নির্বাচন গুলোতে হিন্দু নির্ভরশীলতা থেকে সরে আসার জন্যই আওয়ামীলীগ হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গ হাঙ্গামা বাধিয়ে পরিকল্পিতভাবে হিন্দু শুন্য করার নিলনকশা বাস্তবায়ন করে চলেছে মর্মে হিন্দু সম্প্রদায় বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। সেজন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্থিত্ব রক্ষার জন্য হিন্দুদের নুতন করে ভাববার সময় এসেছে। হিন্দু সম্প্রদায় মনে করে হিন্দুর অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকল রাজনৈতিক দল থেকে হিন্দু নেতাদের পদত্যাগ করে হিন্দু বাাঁচাও আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এখন এসেছে।আপনাদের মনে আছে ১৯৯১ সালে বিএনপি জোট নির্বাচনে জয়লাভ করার পর দেশের দক্ষিনাঞ্চল সহ বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ব্যপক হামলা, লুঠপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষন, বাড়ীঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটার বত্রিশ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সে ঘটনার কোন বিচার হয় নাই।
কাউকে শাস্তি বিধান করা হয় নাই। অথচ ঐ ঘটনাকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামীলীগ ব্যাপক রাজনৈতিক সুবিধা নিয়েছিল, আজও নিয়ে চলেছে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করার পর, চট্টগ্রামের রাউজান ফটিকছড়ি, কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসির নগর, যশোরের অভয়নগর, সাতক্ষীরা সহ গত দুর্গাপুজায় কুমিল্লা চাঁদপুর সহ ২৭ টি জেলায় ব্যপক হামলা হয়। সর্বশেষ নড়াইলে কলেজ শিক্ষককে নিয়ে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তা ইতিহাসে বিরল। কুমিল্লার দিঘির পাড়ে হামলার সময় পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা সহ শতাধিক পুলিশ উপস্থিত ছিলো, নড়াইলের ঘটনার সময়ও ডিসি, এসপি সহ শতাধিক পুলিশের উপস্থিতিতে কলেজ অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে মাঠ দিয়ে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে।
প্রতিটি ঘটনার সাথে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, ঘটনার সময় দুষ্কিৃতিকারীদের না হটিয়ে, বা আসামীদের গ্রেফতার না করে ঘটনার পর ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও বিরোধী গোষ্ঠীর প্রতি অঙ্গুলী নির্দেশ এবং পরে দাঙ্গাকারীদের পুরষ্কৃত করা প্রমাণ করে প্রতিটি ঘটনার পিছনে সরকারের উচ্চ মহলের ইন্ধন আছে। প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের সরব উপস্থিতি ও তাদের মৌলবাদী, জঙ্গীবাদী মানষিকতা প্রমাণ করে মুসলিম লীগ থেকে সরে এলেও এবং নাম পরিবর্তন করে সেকুলার হওয়ার ঘোষণা দিলেও প্রকৃতপক্ষে আওয়ামীলীগ মুসলিমলীগের নীতি আদর্শ থেকে সরে আসেনি; ১৯৪৬ সালে কোলকাতা, কোলকাতা ও নোয়াখালী দাঙ্গাকারী দ্বিজাতিতত্ব প্রতিষ্ঠাকারী মুসলিম লীগের নীতি আদর্শই আওয়ামীলীগ লালন পালন করছে।
১ জানুয়ারী থেকে ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত গত ৬ মাসে দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ৭৯ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, হত্যার হুমকী ৬২০ জন, হত্যা চেষ্টা ১৪৫ জন, জখম ও আহত করা হয়েছে ১৮৩ জনকে, নিখোঁজ হয়েছে ৩২ জন, চাঁদাবাজী হয়েছে ২৭ কোটি ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, পরিবার ও মন্দির লুঠ হয়েছে ১৫৬ টি। বসতবাড়ী হামলা ভাংচুর ও লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে ৪৬৮টি। অগ্নি সংযোগ ৩৪৩টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৯৩টি হামলার ঘটনা ঘটেছে, ভ‚মি দখল হয়েছে ২১৫৯ একর ৩৬ শতাংশ, যার মধ্যে, ¤্রাে, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা আদিবাসী হিন্দুদের ১০০০ একর । দখলের তৎপরতা ৪১৯ একর ৬৩ শতাংশ। ঘরবাড়ী দখলের ঘটনা ঘটেছে ১৭টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ২৯টি, মন্দিরের ভ‚মি দখল ২৯টি, বসত বাড়ী থেকে উচ্ছেদ ১৩২ টি পরিবার। উচ্ছেদের চেষ্টা ৭১৭ টি পরিবার, উচ্ছেদের হুমকী ৮৯৪৩ পরিবার। দেশত্যাগের বাধ্যকরণ ১৫৪টি পরিবার। দেশত্যাগে হুমকী