নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ২২ জুন ২০২২ সকাল ১১ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ টেক্সট ল ইয়াস এসোসিয়েশন এবং ঢাকা ট্যাকসেস বার এসোসিয়েশন এর যৌথ উদ্যোগে সাংবাদিক সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যাক্স ল’ইয়াস এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সোহরাব উদ্দিন, সদস্য সচিব খোরশেদ আলম এবং ঢাকা ট্যাক্সেস বারের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকারিয়া খান স্বপন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী কর আইনজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইতরাল মোস্তফা ও ঢাকা ট্যাক্সেস বারের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য আইনজীবী বৃন্দ
প্রথমই জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়াস এসোসিয়েশন এবং ঢাকা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে শত বাধা অতিক্রম করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু সম্পন্ন করে ২৫ শে জুন শুভ উদ্ভোবন করবেন বলে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জন্য অর্থ বিল পেশ করেন জাতীয় সংসদে ৯ ই জুন। পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদের মাধ্যমে অর্থ বিল ২০২২ যে আয়কর আইনে সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত কিছু ভালো পদক্ষেপ, কিছু সংশোধন ও সংযোজন করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে পেশকৃত অর্থ বিল সংক্রান্ত আমাদের বক্তব্যকে উপস্থাপন করা হল
প্রথম ভাগ অর্থাৎ সরকার করতে প্রস্তাবিত ভালো দিক গুলি
১/ করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির পদক্ষেপ ।আমরা জানি বাংলাদেশে জিডিপি ও কর অনুপাতিক হার অনেক কম। আপনারা আরো জানেন আমাদের দেশে টি.আই.এন ধারী ৭৫ লক্ষ হলেও আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ২৫ লক্ষ করদাতা। এই করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এবার অর্থ বিলে ১৮৪এ ধারার শিরোনাম পরিবর্তন করে ৩৮টি সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি পত্রের কপি দাখিলের বাধ্যবাধকতা করা হয়েছে। এর ফলে আশা করা যায় চলতি কর বৎসরে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
২/পাচার করা অর্থ দেশে আনার ব্যবস্থা।আপনারা জানেন ৭৫ পরবর্তী সকল সরকারের আমলে বিদেশে অর্থ পাচারে করে কানাডায় বেগম পাড়া, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরী হয়েছে বলে মিডিয়াতে প্রচার হচ্ছে এবং এর বাস্তবতা আছে। কোন সরকারই এই বাস্তবতাকে স্বীকার করে নাই। বর্তমান সরকার সাহসের সঙ্গে এই বাস্তবতা স্বীকার করে পাচার করা অর্থ কিভাবে আনা যায় তার একটি আইনী ধারা আয়কর আইনে সংযোজন করেছেন যাহা ১৯এফ নামে অভিহিত করা হয়েছে।
এই ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট সরকার যে সরল মনে বাংলাদেশী ব্যক্তি যিনি অর্থ পাচার করেছেন। তাকে প্রথম বারের মত সুযোগ দিয়েছেন ভাল হওয়ার জন্য। সরকারের এই ডাকে যদি কোন অর্থ পাচারকারী সাড়া না দেয় তাহলে সরকার যেন কঠোর হাতে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়। প্রয়োজনে বাংলাদেশে অবস্থিত তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার মত পদক্ষেপ।
তাছাড়া নগদ ও ব্যাংক ডিপোজিটসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ৭% -এর স্থলে ১০% কর প্রদানের প্রস্তাব করছি।
৩/ কোম্পানীর কর হার হ্রাস। এবারও কোম্পানী করদাতাদের কর হ্রাস করা হইয়াছে। এর ফলে কোম্পানী করদাতারা লাভ প্রদর্শন করিতে সংকোচ বোধ করিবে না। লাভ বেশী প্রদর্শন করা হইলে এর একটি অংশ বিনিয়োগ করা হইবে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়। এর ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। আমরা এই পদক্ষেপকে সানুবাদ জানাই। সেই সংগে ব্যবসার নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ রইল তারা যে সঠিক আয় রিটার্নে উল্লেখ করেন।
৪/ কর রেয়াত ।যে, করদাতাদের কর ভার লাঘব এবং সময় প্রবৃদ্ধি বাড়ার উদ্দেশ্যে আয়কর আইনের ৪৪ ধারার বিধান রাখা হয়েছে।এবার এই বিধানে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। আগে বিনিয়োগকৃত অংকের উপর বড় করদাতাদের কর রেয়াত ১০% দেয়া হত এবার তাহা বৃদ্ধি করে ১৫% করা হয়েছে। ফলে বড় করদাতাদের করা হ্রাস পাবে।অন্যদিকে বিনিয়োগের হার হ্রাস করা হয়েছে। আগে মোট আয়ের ২৫% বিনিয়োগ করা যেত। এখন মোট আয়ের ২০% বিনিয়োগ করা যাবে। ফলে ক্ষুদ্র করদাতাদের কর বৃদ্ধি পাবে। আমরা মোট আয়ের ২৫% বিনিয়োগ করার প্রস্তাব করছি।
৫/ দান বা ঋন ধারা-১৯(২১)।বর্তমান আইনে স্বামী-স্ত্রী বা পিতা-মাতা কর্তৃক ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যতীত দান বা ঋণ প্রদান করলে দানকৃত অংকের উপর কর প্রদান করতে হয় না। কিন্তু ছেলে বা মেয়ে কর্তৃক মা-বাবাকে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যতিত দান করলে দানকৃত অংকের উপর কর ধার্য করা হত।এবার এই ধারায় প্রভ্যাইসুতে দুইটি শব্দ সংযোজন করে ছেলে বা মেয়ে কর্তৃক বাবা মাকে ব্যাংকিং চ্যানেল ছাড়া দান বা ঋণ প্রদান করলে দান ঋণের অংকের উপর কর প্রদান করতে হবে না। আমরা এই জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ অর্থ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই

দ্বিতীয় ভাগ অর্থাৎ প্রস্তাবিত ধারাসমূহ সংশোধন।
১/করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি ।আপনারা জানেন যে, করোনা পরবর্তী ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্ব ব্যাপি নিতা প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূলা লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলছে। এর ফলে নিম্নমধ্য ও মধ্যম আয়ের ব্যক্তিগণ আর্থিক সংকটে আছে তাই আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি আকুল আবেদন করছি মধ্যবিত্তের কথা বিবেচনা করে করমুক্ত মায়ের সীমা ৩ লক্ষ টাকা হইতে বৃদ্ধি করে ৪ লক্ষ টাকার করার প্রস্তাব করছি
সেই সাথে এখানে সরকারের যতটুকু রাজস্ব হানি হবে, তাহা উচ্চ বিদ্রের নিকট আদায় করে তাহা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আয়কর হারে আরেকটি হর সৃষ্টি করে দুই বৎসর আগের ন্যায় ২৫ লক্ষ টাকায় উপরে আয়ের জন্য ৩০% শতাংশ আয়কর আরোপের প্রস্তাব করছি।
২/ প্রস্তাবিত ধারা ১৮৩ এর ক্লজ | সাি বাতিল অর্থাৎ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন।অর্থ বিল-২০২২ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশের ১৪৩ ধারায় নতুন একটি ক্লজ সংযোজন প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে উপকর কমিশনার ইচ্ছা করলে বকেয়া কর আদায়ের জন্য করদাতার গ্যাস, বিদ্যুৎ অথবা পানির লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আদেশ প্রদান করতে পারবে। আমরা এই ক্লজের বিলুপ্তির দাবী করছি। কারণ এই ধারা সংযোজন করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক করদাতারা আরো বেশী হয়রানী হবেন।
৩/ ধারা ১১৭এ(৩) প্রতিস্থাপন- উৎসে কর আদায় কর্তন পরীক্ষা করা- জরিমানা সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা। অর্থ বিল ২০২২ দ্বারা এই ধারাটি উপধারা (৩) প্রতিস্থাপন করা হইয়াছে। উক্ত ধারায় (৩) উপধারা বলা হইয়াছে কোন ব্যক্তি, কোন আয়কর কর্মকর্তাকে এই ব্যাপারে সহায়তা না করিলে অথবা বাধা প্রদান করিলে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করিতে পারিবে আয়কর কর্তৃপক্ষ।আমরা এই উপধারাটিতে উল্লেখিত জরিমানা পরিমান সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করছি।
৩য় বিভাগ- নতুন প্রস্তাব
১/ ৮২বিবিবি ধারা উপধারা (৭) সংশোধনের প্রস্তাব জানেন যে ৮২বিবিবি ধারায় রিটার্ন দাখিল করিলে রিটার্নটি গৃহিত হইয়াছে বলে ধরে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে অডিট করে যদি কোন সুনির্দিষ্ট ত্রুটি পাওয়া যায় তবে করদাতাকে নোটিশ প্রদান করে ত্রুটি সংশোধনে সুযোগ দেওয়া বিধান আছে।কিন্তু বাস্তবতা হল উপকর কমিশনারা সুনির্দিষ্ট ত্রুটির কথা না বলিয়া, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আনুিমানিক ভাবে ত্রুটি কথা বলেন যেমন আপনার পারিবারিক খরচ আরো বেশী বলে মনে হয়, আপনার বিক্রয় কম: দেখিয়াছেন ইত্যাদি। ফলে করদাতার পক্ষে ত্রুটি সংশোধন করে রিটার্ন দাখিল করা সম্ভ রিটানটি সাধারন খ্রিস্টান হিসাবে গণ্য করে আয় নির্ণয়ের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।আমরা এই ধারায় নোটিশের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে ত্রুটি উল্লেখ করায় বিধানের প্রস্তাব করছি।
২/ ধারা ১৭৪ ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব করছি অর্থাৎ প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে নতুন বিধান আরোপ করদাতা নিজে বা তার প্রতিনিধি আয়কর কর্তৃপক্ষের নিকট হাজির হতে পারেন শুনানীর জন্য। এই ক্ষেত্রে আয়কর আইনজীবী ছাড়াও করদাতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন এমন কর্মকর্তারা হাজির হয়েও প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন। আমরা আয়কর আইনজীবীগণ যখন প্রতিনিধিত্ব করি তখন কোর্ট ফি সহ উকালত নামা দাখিল করি। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে অথবা কোম্পানী করদাতাদের ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ যখন প্রতিনিধিত্ব করেন তখন কোর্ট ফিসহ কোন ঘোষণা পত্র দাখিল করেন না। আমরা এইক্ষেত্রে ২০০ টাকা ইম্পে ঘোষণা পত্র দাখিল করতঃ প্রতিনিধিত্ব করার বিধানের প্রস্তাব করছি