বায়রা সিন্ডিকেট বিরোধী মহাজোট সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবী-বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক পাঠাতে হবে

0
109

নিজস্ব প্রতিনিধঃ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে অনুষ্ঠিত হয় বায়রা সিন্ডিকেট বিরোধী মহাজোট সংবাদ সম্মেলন। ১০মে ২০২২, মঙ্গলবার সাকাল ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বায়রা সিন্ডিকেট বিরোধী মহাজোটের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান বায়রা নেতারা।শ্রমবাজারে কোনো ধরনের সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় না দিয়ে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বায়রা সিন্ডিকেট বিরোধী মহাজোট। অন্যান্য দেশের মতো বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে কম অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানোর অনুরোধ জানান বায়রা নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বায়রার সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নােমান। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ১০টি বাংলাদেশি রিক্রুটিং লাইসেন্স নিয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি পাঠানো শুরু হয়।

এরপর ২০১৮ সালে অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযােগে তৎকালীন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের দায়িত্বভার নেওয়ার পরই ২০১৬-২০১৮ চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ বছরে ১৫ লাখ কর্মী মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দুই লাখ ৭৫ হাজার কর্মী পাঠানো হয়। এরপর বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময় এ সিন্ডিকেটের দ্বারা নিয়ােগ করা প্রায় লক্ষাধিক কর্মীর মালয়েশিয়া যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এতে বিদেশগামী কর্মী এবং দেশের আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়। তিনি আরো বলেন, অভিবাসন প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত। দু’দেশের মধ্যে আলােচনা সাপেক্ষে কর্মীর স্বার্থরক্ষা করে এমন একটি স্বচ্ছ সিস্টেমের মাধ্যমে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পুনরায় মালয়েশিয়া শ্রমবাজারটি উন্মুক্ত করা হোক।

বায়রা সিন্ডিকেট বিরোধী মহাজোট

সিন্ডিকেট প্রথা বাতিল করে অতিসত্বর মালয়েশিয়া শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বায়রার সব সম্মানিত সদস্য ও বিদেশগামী কর্মী ভাইদের পক্ষ থেকে জোরদাবি জানাচ্ছি।২০১৬-২০১৮ সময়ে ১০ লাইসেন্স সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর কারণে কর্মীদের অভিবাসন ব্যয়, মেডিকেলসহ অন্যান্য বিষয়ে যে ভােগান্তির শিকার হয়েছিলেন তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে ১০ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাঠানো কর্মীদের ভােগান্তির কথা প্রচার করা হয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩৫ হাজার টাকায় কর্মী পাঠানোর কথা থাকলেও তার পরিবর্তে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি কর্মীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। এসময় নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানোর অঙ্গীকার করে নোমান বলেন, আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা অঙ্গীকার করছি, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠাবো।

এ ব্যাপারে কোনো ব্যত্যয় বা অনিয়ম হলে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে। আমরা আরও অঙ্গীকারবদ্ধ যে, প্রধানমন্ত্রীর ঘােষিত প্রত্যেক উপজেলা থেকে ন্যূনপক্ষে এক হাজার কর্মী পাঠাতে বাধ্য থাকবাে। অবৈধ ও অনৈতিক তথাকথিত ২৫ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরােধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নোমান বলেন, সবাই মিলে এ অবৈধ ও অনৈতিক তথাকথিত ২৫ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিরােধ গড়ে তুলতে হবে। এ তথাকথিত সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের কারণে গতবছরের ১৯ ডিসেম্বর সমঝােতা সই হওয়ার পরও গত পাঁচ মাস ধরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো যায়নি। তথাকথিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোয় মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে অন্য ১৩টি সোর্স কান্ট্রির মতো কর্মী পাঠানো বাধা দিয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ সময় বায়রা নেতারা বলেন, দেশের তিন হাজার রিক্রুটিং এজেন্সি যদি অভিবাসন নিয়ে কাজ করে অভিবাসন ব্যয় বাড়ার সুযোগ নেই। টিকিট কর্মী পাঠানো ও এমপ্লয়ি দুজনকেই বাধাগ্রস্ত করে। আমরা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অবশ্যই উন্মুক্ত দেখতে চাই। তবে কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেটমুক্ত অবশ্যই হওয়া উচিত। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বায়রার সাবেক সভাপতি মােহাম্মদ আবুল বাসার, সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাদাত হােসেন, সাবেক সহ-সভাপতি আবুল বারাকাত ভূঁইয়া, সাবেক অর্থসচিব মােহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, রিক্রুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদ সভাপতি টিপু সুলতান, বায়রা গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্টের সভাপতি মুজিবর রহমান প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে