নিজস্ব প্রতিনিধি:-প্রথমবারের মতো রাজধানীর শাহবাগের পুরাতন বাংলাদেশ বেতার ভবনে পুষ্পস্তবক অপর্ণ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বি ব্লকের ডা. মিল্টন হলে আলোচনা সভা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার ও প্রদর্শনসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপিত হয়েছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক এই দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, চিকিৎসকবৃন্দ, ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, কর্মকর্তাবৃন্দ, নার্সবৃন্দ ও কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অপর্ণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এরপর সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে প্রথমমবারের মতো শাহবাগের পুরাতন বেতার ভবনে যেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ সমগ্র দেশের মানুষ শুনতে পেয়েছিলেন সেই ঐতিহাসিক ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের নিমিত্তে পুষ্পস্তবক অপর্ণের মাধ্যমে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এরপর সকাল ১০টায় শহীদ ডা. মিল্টন হলে ৭ মার্চের ‘ভাষণের প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে মূখ্য আলোচক ছিলেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। মহতী এই আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
ঐতিহাসিক এই কর্মসূচীপালন কালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ ভাষণের মাধ্যমেই বাঙালি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যার ফল শ্রুতিতে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। মাননীয় উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ বেতার, শাহবাগস্থ সম্প্রচার ভবন ১৯৬০ সালে স্থাপিত হয়। এটি দেশের প্রথম এবং প্রাচীনতম পুর্ণাঙ্গ ব্রডকাস্টিং হাউজ। এই সম্প্রচার ভবন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহকরূপে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এই ভবনের নীচ তলায় আঞ্চলিক প্রকৌশলীর দপ্তর, বাংলাদেশ বেতার, ঢাকা কেন্দ্রের অবস্থান। এই কেন্দ্রটি পুরাতন প্রচার ভবন নামে পরিচিত।
১৯৭১ এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ সরাসরি সম্প্রচারে তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে এই কেন্দ্রের সকল সম্প্রচার কার্যক্রম বেতার কর্মীরা বন্ধ করে দেন এবং তাঁদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরের দিন ৮ মার্চ সকালে এখান থেকে ঐতিহাসিক ভাষণটি প্রচারিত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই কেন্দ্রের ১ নং ষ্টুডিও থেকে জাতির উদ্দেশ্যে প্রথম সরাসরি ভাষণ প্রদান করেন। এই পুরাতন বেতার ভবন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাসেবার পরিধি বিস্তৃত করতে এই ভবনটি অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন পুরাতন বেতার ভবনের যে কক্ষ হতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচারিত হয়েছে তা সংরক্ষণ করে জাদুঘর করার উদ্যোগ নিয়েছে। মাননীয় উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।মাননীয় উপাচার্য আরো বলেন, ঐতিহাসিক ৬ দফার মধ্যেই স্বাধীনতার বীজ নিহিত ছিল। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭মার্চ সুচতুরতার সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আজো যারা ৭ মার্চকে স্বীকার করে না বা ৭ মার্চ যে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তা বুঝতে ও মানতে চায় না তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। মূখ্য আলোচক ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান ১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণ করে বলেন, একটি ভাষণ একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে, সেটা হলো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। সম্পাদনা: সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুব ও সুব্রত বিশ্বাস। ছবি: সোহেল গাজী। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।